
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে ভারতের হামলার জবাবে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, সেনাবাহিনীকে ‘উপযুক্ত জবাব’ দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, এই পদক্ষেপ নেওয়া হয় ভারতীয় বাহিনীর হামলার পর।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ভারত পাকিস্তান ও আজাদ কাশ্মীরের বিভিন্ন এলাকায় হামলা চালায়। একে গত কয়েক দশকের মধ্যে দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। পাকিস্তান বলেছে, তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। তবে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সে দাবি স্বীকার করেনি।
ভারত জানিয়েছে, তারা পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ৯টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে, যেগুলো ‘সন্ত্রাসী ঘাঁটি’ বলে দাবি করেছে। নয়াদিল্লিতে দুই ভারতীয় সামরিক মুখপাত্র বলেছেন, হামলার লক্ষ্য ছিল জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ ও লস্কর-ই-তৈয়্যবার ঘাঁটি।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন, পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর কর্মকাণ্ড নজরদারিতে ধরা পড়েছিল এবং ভারতের বিরুদ্ধে আরও হামলার আশঙ্কা ছিল। সে কারণেই তারা প্রতিরোধমূলক হামলা চালাতে বাধ্য হয়।
পাকিস্তান পাল্টা অভিযোগে বলেছে, তাদের ছয়টি স্থানে ভারত হামলা চালিয়েছে, তবে সেগুলোর কোনোটি সন্ত্রাসীদের ঘাঁটি ছিল না। দেশটির সামরিক বাহিনীর ভাষ্য, এই হামলায় অন্তত ২৬ জন বেসামরিক মানুষ নিহত ও ৪৬ জন আহত হয়েছে। ভারতীয় পুলিশ ও চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, পাল্টা গোলাবর্ষণে পাকিস্তানের দিক থেকে কমপক্ষে সাতজন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৩০ জন আহত হয়েছেন।
কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর জঙ্গি হামলায় ২৬ ভারতীয় নিহত হওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই নতুন এ সংঘর্ষ শুরু হলো।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় রাশিয়া, চীনসহ বিভিন্ন দেশ দুই পক্ষকে শান্ত থাকার এবং উত্তেজনা হ্রাসের আহ্বান জানিয়েছে। যুক্তরাজ্যের এক মন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রয়োজন হলে তাঁদের দেশ মধ্যস্থতার জন্য প্রস্তুত।
কাশ্মীর অঞ্চল নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের বিরোধ ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন শেষ হওয়ার পর থেকেই চলছে। এই বিরোধ নিয়ে দুই দেশ এখন পর্যন্ত দুবার যুদ্ধে জড়িয়েছে, সর্বশেষ যুদ্ধ হয়েছিল ১৯৯৯ সালে।