বিনা নোটিশে কোনো সাংবাদিককে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুযোগ নেই : মাহফুজ আলম


বাসস | Published: 2025-05-05 19:30:09 BdST | Updated: 2025-06-02 06:41:38 BdST

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেছেন, বিনা নোটিশে হুট করে কোনো সাংবাদিককে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুযোগ নেই। আজ সোমবার চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের হল রুমে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট আয়োজিত সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।

‘ফ্যাসিবাদী শাসনামলে সাংবাদিক হত্যা-নিপীড়ন’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘তিনজন সাংবাদিক চাকুরিচ্যুত হয়েছে, আমরা এর বিরোধিতা করি। সরকার চায় না কোনো সাংবাদিক চাকুরিচ্যুত হোক। চাকুরিচ্যুত করতে হলে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে, নোটিশ দিয়ে করতে হবে। একটি মানুষের জীবিকার ওপর আঘাত আসে, আমরা এমন কিছুর বিরোধিতা করি।’

বিজ্ঞাপন

তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘দীপ্ত টিভি কোনো নোটিশ পাঠায়নি কাউকে, এমনভাবে টেলিভিশনটি সংবাদ প্রচার বন্ধ করে দিয়েছিল, সারা দুনিয়ায় নিউজ হলো, যেন মনে হলো সরকার বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু সরকার তো বন্ধ করেনি। এটা হঠকারিতা। এটা কোনো ভালো লক্ষণ নয়। সরকারের নীতিমালা হলো কোনো কিছু বন্ধ করা হবে না। তবে সংবাদ মাধ্যম কোনো দলের হয়ে কাজ করেছে কি না সেটা খতিয়ে দেখা হবে।’

মাহফুজ আলম বলেন, ‘সরকারকে প্রশ্ন করতে হবে, সরকারকে প্রশ্ন করলে সরকার দায়িত্বশীল হয়। তবে প্রশ্ন আর প্রোপাগান্ডা ভিন্ন ইস্যু। কয়েকটি পত্রিকা এখনও জুলাই অভ্যুত্থান লেখে না, তারা লেখে জুলাই আন্দোলন, তারা বলে না জুলাই অভ্যুত্থানের সরকার, তারা বলে ক্ষমতার পটপরিবর্তনের সরকার। এর মানে দাঁড়ায়, এখানে দুই হাজার মানুষ শহীদ হয়নি। একটা চক্রান্ত হয়েছিল, সেখানে হাসিনাকে উৎখাত করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যম এটা করতে পারে না।’

এসব সংবাদমাধ্যম বন্ধ করা হয়নি উল্লেখ করে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনাদের চোখের সামনে ঘটেছে সবকিছু। গণমাধ্যম এতবড় অভ্যুত্থানকে কেবল আন্দোলন নামে চালিয়ে দিচ্ছে, এটা খুবই হতাশা আর দুঃখজনক।’

কোনো সংবাদ মাধ্যমে আজ পর্যন্ত আঘাত করতে দেওয়া হয়নি, আর সামনেও হতে দেওয়া হবে না উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ ভয়ংকর-স্মৃতিতে সব সময় এটা লালন করতে হবে। স্মৃতিতে না থাকলে এই কালো অধ্যায় মানুষ ভুলে যাবে। শেখ মুজিব আর শেখ হাসিনার শাসনামল কোনো কালের সাথেই মিলে না।’

বিজ্ঞাপন

আওয়ামী লীগের আমলে যে গণমাধ্যমগুলোর লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল এগুলোর তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানান তথ্য উপদেষ্টা।

মাহফুজ আলম বলেন, ‘এরশাদ স্বৈরাচার হলেও শেখ হাসিনাকে বলা হয় ফ্যাসিস্ট। যার কারণ, এরশাদের লোকবল কম ছিল অথচ আওয়ামী লীগের মুজিব আর হাসিনার সব জায়গায় লোক ছিল, সকল ব্যবস্থায় ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে এই দলটি।’

উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, ‘আজকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা পলাতক, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের পালিয়ে থাকার জন্য শেখ হাসিনা দায়ী। শেখ হাসিনা ছিল শেখ পরিবারের সর্বশেষ লোক, যিনি পালিয়ে গেছেন। এর আগে শেখ পরিবারের সবাই পালিয়েছে।’

সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য রাখেন, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা, দৈনিক যায়যায়দিনের সম্পাদক শফিক রেহমান, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ, দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, দৈনিক সংগ্রামের সাবেক সম্পাদক আবুল আসাদ, বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, সহ-সভাপতি খায়রুল বাশার, প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ, দৈনিক নয়া দিগন্তের নির্বাহী সম্পাদক মাসুমুর রহমান খলিলি ও শীর্ষ নিউজের সম্পাদক একরামুল হক।

চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদা বেগম, তথ্য অধিদফতরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. নিজামূল কবীর, জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. কাউসার আহাম্মদ, গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ফায়জুল হক এ সময় উপস্থিত ছিলেন।