খাগড়াছড়ির তিনটি সীমান্ত দিয়ে ৮১ জন নারী, পুরুষ ও শিশুকে বাংলাদেশে পুশ ইন করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। বুধবার ভোরে মাটিরাঙ্গা, রামগড় ও পানছড়ি উপজেলার সীমান্ত এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বিজিবি ও স্থানীয় সূত্র জানায়, জেলার মাটিরাঙার গোমতী শান্তিপুর সীমান্ত দিয়ে ২৭ জন, আচালং দিয়ে ২৩ জন, পানছড়ির লোগাং দিয়ে ৩০ জন এবং রামগড় সীমান্ত দিয়ে ১ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দেয় বিএসএফ। পুশ ইন হওয়া ব্যক্তিরা সবাই ভারতের গুজরাট রাজ্যের মুসলিম সম্প্রদায়ের বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। স্থানীয়দের ধারণা, এ সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, তাঁরা বাংলা ভাষাভাষী হলেও জন্ম ও বেড়ে ওঠা গুজরাটে। তাঁদের দাবি, গুজরাট থেকে উড়োজাহাজে করে তাঁদের ত্রিপুরা রাজ্যে আনা হয়। পরে ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী খেদাছড়া, যামিনীপাড়া, রুপসেনপাড়া ও অন্যান্য দুর্গম এলাকা দিয়ে তাঁদের বাংলাদেশে পুশ ইন করা হয়।
খাগড়াছড়ির স্থানীয় ১ নম্বর লোগাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জয় কুমার চাকমা বলেন, ‘সীমান্ত এলাকায় অবৈধভাবে ভারতীয়দের প্রবেশের খবর শুনেছি। সীমান্ত এলাকা দুর্গম হওয়ায় সরেজমিনে যাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে আমরা বিষয়টি নিয়ে সতর্ক আছি, বিজিবিও তৎপর রয়েছে।’
স্থানীয়রা জানান, গুজরাট থেকে আনুমানিক ৪৫০ জনকে দুটি উড়োজাহাজে করে ত্রিপুরায় আনা হয়েছে। তাঁদের পর্যায়ক্রমে পুশ ইন করা হবে। ১১৪ বিএসএফ এলকেপাড়া ক্যাম্পের সদস্যরা ত্রিপুরার রইস্যাবাড়ী ও নতুনবাজার সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পুশ ইন করতে তৎপর ছিলেন। পুশ ইন করার আগে তাঁদের চোখ বেঁধে প্রায় এক ঘণ্টা পায়ে হেঁটে সীমান্তে নিয়ে আসা হয়।
পানছড়ি ৩ বিজিবি ব্যাটালিয়ন সূত্র জানিয়েছে, সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সদস্যরা সতর্ক রয়েছেন। তবে এ বিষয়ে বিজিবির পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেওয়া হয়নি।
রামগড় ৪৩ বিজিবির সহকারী পরিচালক রাজু আহমেদ জানান, রামগড় সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশকারী একজনকে আটক করে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
