২৪ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের শাস্তি চেয়ে চবিসাসের হুঁশিয়ারি


CU Correspondent | Published: 2023-06-21 01:07:48 BdST | Updated: 2024-04-28 17:23:15 BdST

সাংবাদিকদের ওপর ন্যাক্কারজনক হামলায় জড়িতদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শাস্তির আল্টিমেটাম দিয়ে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (চবিসাস)। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে লাগাতার কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন সমিতির নেতারা।

মঙ্গলবার (২০ জানুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু ম্যুরালের সামনে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচি শেষে উপাচার্য বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

চবিসাসের প্রচার, প্রকাশনা ও দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ আজহারের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি সৈয়দ বায়েজিদ ইমন, ইমরান হোসাইন, বর্তমান সভাপতি মাহবুব এ রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইমাম ইমুসহ সমিতির অন্য সদস্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সোমবার (১৯ জুন) রাতে চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে কথা-কাটাকাটির জেরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্য ও দৈনিক আমাদের নতুন সময় পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি দোস্ত মোহাম্মদকে হত্যাচেষ্টার উদ্দেশ্যে মারধর করেন ছাত্রলীগের ১০-১২ জন নেতাকর্মী। মারধরের একপর্যায়ে ভুক্তভোগীর গায়ে গরম চা ঢেলে দেন তারা। চায়ের কাপ দিয়ে বাড়ি দিয়ে তার মাথা কেটে ফেলা হয়। এসময় ভুক্তভোগী মাটিতে পড়ে গেলে তার পেটে উপর্যুপরি লাথি মারেন অভিযুক্তরা। ছাত্রলীগ কর্মীরা একপর্যায়ে বেল্ট খুলে মারধর করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হয়। সেখান থেকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে স্থানান্তর করেন।

মানববন্ধনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি সৈয়দ বায়েজিদ ইমন বলেন, সাংবাদিককে হামলার সাহস একদিনে তৈরি হয়নি। দিনের পর দিন সাধারণ শিক্ষার্থী এবং সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসে প্রশাসন মূলা ঝুলিয়ে রেখেছে। এই যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি তা দিনদিন ছাত্রলীগকে উগ্র হতে বাধ্য করেছে। আমরা আইনের ওপর আস্থা রাখি। আশা করবো, প্রশাসন দ্রুতই পদক্ষেপ নেবে। অন্যথায় আমরা যারা সাবেক আছি এবং বর্তমানে বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত রয়েছি তারা মিলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবো।

চবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইমাম ইমু বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে চাকসু কার্যকর নেই। নেই কোনো ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের কার্যক্রম। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো কাজে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব করে কর্মরত সাংবাদিকরা। কিন্তু আমরা দেখছি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকরাই এখানে নিরাপদ না। বারবার সাংবাদিক হেনস্তার ঘটনা ঘটছে। প্রশাসনের নির্লিপ্ততা ছাত্রলীগ নামধারী সন্ত্রাসীদের সাহস বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই, এই ঘটনার যদি বিচার না হয় আমরা গণআন্দোলনে যাবো।

চবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মাহবুব এ রহমান বলেন, দোস্ত মোহাম্মদ একজন শিক্ষার্থী, গণমাধ্যমকর্মী এবং বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। আজকে লজ্জা হয় যিনি এই দেশকে স্বাধীন করে গেছেন তার সন্তানকে আমরা নিরাপত্তা দিতে পারিনি। এই দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেই নিতে হবে। কাল সারারাত তার সঙ্গে ছিলাম। এত বেশি তাকে মারা হয়েছে মনে হচ্ছিল হয়তো তিনি মারা যাবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭ হাজার শিক্ষার্থীকে যেই প্রশাসন নিরাপত্তা দেওয়ার কথা সেই প্রশাসন বারবার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এ কারণে একটি বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে যা ছাত্রলীগ নামে এই সন্ত্রাসীদের সাহস বাড়িয়ে দিয়েছে।

চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরিণ আখতার বলেন, এ ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। ঘটনা শুনেই আমি প্রক্টরকে পাঠিয়েছি। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে বলেছি। আমি স্পষ্টভাবে বলছি, অপরাধী যতই শক্তিশালী হোক না কেন আমরা কঠিন ব্যবস্থা নেবো। প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় বাদী হয়ে মামলা করবে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই আপনারা এই পদক্ষেপ দেখতে পাবেন।