ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ঘ’ ইউনিট বহাল চেয়ে উপাচার্যকে ‘খোলা চিঠি’ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ফ্রন্ট।
মঙ্গলবার দুপুরে মধুর ক্যান্টিনে সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ‘ঘ’ ইউনিট বাতিলের সিদ্ধান্তকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৭৩ এর অধ্যাদেশ পরিপন্থী বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ছাত্র ফ্রন্টের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক আরাফাত সাদ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ-১৯৭৩ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পর্যায়ের ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট একাডেমিক কমিটিসমূহের। ফলে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ১৬টি একাডেমিক কমিটির সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে ‘ঘ’ ইউনিট বাতিল করা হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৭৩ অধ্যাদেশ পরিপন্থী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনেকটা দায়সারা উপায়ে ‘ঘ’ ইউনিট বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে উল্লেখ করে লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের পেছনে সময়সাপেক্ষ ভাবনা ও যথাযথ আলাপ-আলোচনা প্রয়োজনীয়। কিন্তু প্রশাসন হুট করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শিক্ষার্থীদের দুর্দশার কথা না ভেবে, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা না করেই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। ‘ঘ’ ইউনিট বাতিল করার পর শিক্ষার্থীরা কীভাবে নিজেদের স্ব স্ব বিভাগ পরিবর্তন করে অন্য বিভাগের সাবজেক্টে ভর্তি হবে সে বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট নির্দেশনা এখনো প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাওয়া যায়নি। করোনার বন্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা মারাত্মকভাবে মানসিক এবং একাডেমিক ক্ষতির শিকার হয়েছে। এরূপ পরিস্থিতিতে ‘ঘ’ ইউনিট বাতিলের মতো অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত তাদের সামগ্রিক কষ্ট বাড়িয়ে দিবে।
আরাফাত সাদ বলেন, ‘ঘ’ ইউনিট বাতিলের ফলে শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাত্র একবার পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাবে। এর আগে একজন বিজ্ঞান বা মানবিক বা বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থী তার নিজ ইউনিট এর সঙ্গে সঙ্গে ‘ঘ’ ইউনিটে পরীক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে দুইবার পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পেতো। নিজ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে ব্যর্থ হলে শিক্ষার্থীরা ‘ঘ’ ইউনিটের মাধ্যমে আরেকবার পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পেতো। এ সুযোগটা এখন আর থাকছে না। আগে থেকেই দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ না থাকা ও প্রায় ১ হাজার ৪০টি আসন কমানোর সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের কারণে বলা যাচ্ছে যে ‘ঘ’ ইউনিট বাতিল হলে শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ সংকুচিত হবে। অর্থাৎ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ধীরে ধীরে শিক্ষা সংকোচন নীতির দিকে এগোচ্ছে ।
সংবাদ সম্মেলনে ‘ঘ’ ইউনিট বাতিলের বিষয়ে পুনর্বিবেচনা না করলে ভর্তি পরীক্ষার্থীদের নিয়ে ‘কঠোর’ আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন ছাত্র ফ্রন্টের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী।
তিনি বলেন, ‘ঘ’ ইউনিট বাতিলের বিষয়ে পুনর্বিবেচনা না করলে আমরা শুধু খোলা চিঠির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকব না। শিক্ষার্থীদের সংঘটিত করে খুব দ্রুত কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব।
সংবাদ সম্মেলনে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রগতি বর্মণ তমা, সহ-সভাপতি সাদিকুল ইসলাম ও প্রচার সম্পাদক মোজাম্মেলক হক উপস্থিত ছিলেন।
