অনুমোদনবিহীন হাসপাতালগুলো অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে: রাব্বানী


Dhaka | Published: 2020-11-12 00:28:36 BdST | Updated: 2024-05-08 12:21:07 BdST

পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুল করিমকে হত্যার প্রতিবাদে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের মানববন্ধন ও শাহবাগ অবরোধ:

পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুল করিমকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে আজ ১১ নভেম্বর বুধবার বিকাল সাড়ে তিনটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো: আল মামুনের সঞ্চালনায় উক্ত কর্মসূচীতে সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। উক্ত কর্মসূচীতে সংহতি জানিয়ে আরোও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর সাবেক জিএস গোলাম রাব্বানী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি শরীফুল হাসান, আরুক মুন্সী, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হামজা রহমান অন্তর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ, বুটেক্স শাখার সাধারণ সম্পাদক রেদোয়ানুল হাসানসহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে রাজু ভাস্কর্য থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কিছুক্ষণ সময় শাহবাগ অবরোধ করে রাখে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাকর্মীরা। দশ মিনিট শাহবাগ অবরোধ শেষে ৪ দফা দাবি বাস্তবায়ন করার জন্য সরকারকে ৭২ ঘন্টার আলটিমেটাম দেয়া হয়।

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের বক্তব্যে ডাকসুর সাবেক জিএস গোলাম রাব্বানী বলেন, "জাতির মেধাবী সন্তান একজন পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুল করিমের নির্মম হত্যাকাণ্ড কখনোই মেনে নেয়া যায় না। আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সমগ্র দেশে অনুমোদনবিহীন হাসপাতালগুলো অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। এব্যাপারে স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে পুলিশ বিভাগকেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হব।"

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি শরীফুল হাসান বলেন, "বাংলাদেশ পুলিশের মেধাবী কর্মকর্তা আনিসুল করিমের হত্যাকাণ্ডের মদদদাতাসহ জড়িত সকলকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। রাজধানীসহ সমগ্র দেশে অবৈধ অনুমোদনবিহীন হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো বন্ধ করতে হবে। অন্যথায় এধরনের ঘটনাগুলোর পুনরাবৃত্তি ঘটতেই থাকবে।"

মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ,কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আল মামুন বলেন, "আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে দেশের সকল অবৈধ ও অনুমোদনবিহীন হাসপাতাল বন্ধের দাবি জানাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। লালমনিরহাটে একজন মানুষকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে ফেলার পর আবার ঢাকাস্থ আদাবরে অবস্থিত অনুমোদনহীন মাইন্ড এইড হাসপাতালে বাংলাদেশ পুলিশের একজন মেধাবী কর্মকর্তা সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপারকে চিকিৎসার নামে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এহেন ন্যাক্কারজনক ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। করোনা ভাইরাস সংকটে বাংলাদেশ পুলিশের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত প্রশংসনীয়। নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পুলিশ জনগণের সেবায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সেই পুলিশ বাহিনীর একজন কর্মকর্তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে যা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও অমানবিক।"

আল মামুন আরো বলেন, "কাউকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা অত্যন্ত জঘন্য ও অমার্জনীয় অপরাধ। একজন মানুষ চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যেয়ে কারো আঘাতে লাশ হয়ে ফিরে আসবে এটা কখনোই কাম্য নয়। ঢাকা শহরে অনুমোদনবিহীন অনেক হাসপাতাল ও ক্লিনিক রয়েছে। মনে হয় এগুলো দেখার কেউ নাই। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের সঠিক নজরদারির অভাবে অনুমোদনবিহীন এসব হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো ব্যাঙ্গের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে। এসব জায়গায় রোগীরা চিকিৎসার নামে প্রতিনিয়ত হয়রানী, ভুল চিকিৎসা ও প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঠিক নজরদারি থাকলে আজকে হয়তো আনিসুল করিম এর মতো একজন মেধাবী পুলিশ কর্মকর্তাকে আমাদের হারাতে হতো না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট পরিচালককে এধরণের ঘটনার জন্য জবাবদিহি করা উচিত বলে আমরা মনে করি। পুলিশ কর্মকর্তাকে পিটিয়ে হত্যার পিছনে অন্য কোন অসৎ উদ্দেশ্য আছে কিনা তা খতিয়ে দেখার জোর দাবি জানাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। মাইন্ড এইড হাসপাতালের পরিচালকসহ এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সকলকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় আগামী ৭২ ঘন্টা পর মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ শাহবাগ অবরোধসহ আরোও কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করবে।"

মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ এর ৪দফা দাবিসমূহ:

১। পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুল করিম এর হত্যাকারী ও হত্যাকাণ্ডের মদদদাতা সকলকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

২। অনুমোদনবিহীন মাইন্ড এইড হাসপাতালের পরিচালক ও ম্যানেজমেন্ট বোর্ডের সকলকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

৩। একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের গাফিলতি ও দায়িত্বহীনতার দায়ে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

৪। আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে সমগ্র বাংলাদেশে অবৈধ ও অনুমোদনবিহীন হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো বন্ধ করতে হবে।