৩৯ দিন পর খুললো কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়


Desk report | Published: 2024-06-09 08:16:46 BdST | Updated: 2024-06-23 09:03:42 BdST

 

অবশেষে খুলেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) বন্ধ দরজা। উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের সঙ্গে শিক্ষক সমিতির বিরোধের জেরে বন্ধ হয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয়টি। বন্ধের ৩৬ দিন বন্ধের পর গত ৫ জুন অনুষ্ঠিত ৯৫তম জরুরি সিন্ডিকেট সভা আজ রবিবার (৯ জুন) থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টি খুলে দেওয়া সিদ্ধান্ত হয়। তবে আজ খুললেও শ্রেণি পাঠদান শুরু হবে আগামী ২৩ জুন থেকে। আজ থেকে চলবে প্রশাসনিক কার্যক্রম।

সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৬ জুন থেকে ২০ জুন পর্যন্ত পবিত্র ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি। ২১ ও ২২ জুন শুক্র-শনিবার। এ অবস্থায় ২৩ জুন থেকে ক্লাস শুরু করতে হবে। অফিস খোলা হবে ৯ জুন থেকে। পরে সিন্ডিকেট সদস্যরা ঐকমত্য হয়ে ওই সিদ্ধান্তে পৌঁছান। সভায় শিক্ষকদের সাত দফা দাবি নিয়ে আলোচনা ও পর্যালোচনা হয়। দাবিগুলোর বেশির ভাগই পূরণ হওয়ার পথে বলে সিন্ডিকেটকে জানানো হয়।

এর আগে, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকালে উপাচার্যের দপ্তরে শিক্ষকদের ‘থাপড়িয়ে দাঁত ফেলে দেওয়ার’ হুমকি দেওয়ার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার ও কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ জাকির হোসেনকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়।

১৯ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৪টায় উপাচার্যের দপ্তরে শিক্ষক সমিতির নবনির্বাচিত সদস্যদের সঙ্গে বিভিন্ন দাবি নিয়ে উপাচার্যের বাকবিতণ্ডা হয়। ওই সময় ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা ও কর্মকর্তা সমিতির এক নেতা শিক্ষকদের হেনস্তা করেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষক সমিতি তিন দফা দাবি দেয়। পরবর্তী সময়ে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ১৯ মার্চ থেকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত ক্লাস বর্জন কর্মসূচি পালন করে শিক্ষক সমিতি।

এরপর ঈদুল ফিতরের বন্ধ শেষে বিশ্ববিদ্যালয় খুললে তিন দিন ক্লাস হওয়ার পর আবারও আন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলনের এক পর্যায়ে ২৮ এপ্রিল দুপুরে উপাচার্য, তাঁর অনুসারী কিছু শিক্ষক ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে শিক্ষক সমিতির নেতারা ধাক্কাধাক্কি, কিলঘুষি ও হামলায় জড়িয়ে পড়েন।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষক সমিতি উপাচার্যসহ ছাত্রলীগের সাবেক নেতাসহ ২০ জনের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও শিক্ষক সমিতির ছয়জনের নামে পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেন।

এমন পরিস্থিতিতে ৩০ এপ্রিল রাতে জরুরি সিন্ডিকেট সভা করে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও হল বন্ধ করে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে শিক্ষকদের দাবি দাওয়া ও ২৮ এপ্রিলের ঘটনা নিয়ে দুটি তদন্ত কমিটি হয়। এরপর থেকে আর বিশ্ববিদ্যালয় খোলেনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর রোববার থেকে সব অফিস কার্যক্রম চলবে। যেহেতু শিক্ষার্থীরা অনেকেই বাড়ি চলে গেছে তাই এই সপ্তাহে শ্রেণি কার্যক্রম চালু করা সম্ভব হয়নি। তাই আগামী ২৩ জুন থেকে শ্রেণি কার্যক্রম চালু হবে।

এই বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) ড. মাহমুদুল হাছান বলেন, ‘আমাদের চলমান যে আন্দোলন সে আন্দোলনের দাবি-দাওয়া কতটুকু মেনে নেওয়া হয়েছে সে বিষয় সিন্ডিকেটের লিখিত প্রতিবেদন পেলে জানতে পারব। তারপর আমরা কার্যনির্বাহী কমিটির সভা থেকে পরবর্তী সিন্ধান্ত গ্রহণ করব।’