জাবিতে প্রথমবারের মতো নারী শিক্ষার্থীদের প্রীতি ফুটবল ম্যাচ


Desk report | Published: 2024-09-23 09:07:53 BdST | Updated: 2024-09-23 11:30:05 BdST

প্রতিবারের মতো এবারও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নৃবিজ্ঞান বিভাগ আয়োজন করেছে মর্যাদাপূর্ণ ‘মিশু স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট সিজন-৮’। গতানুগতিক ধারা ভেঙে এবারের ইভেন্টের বিশেষ আকর্ষণ ছিল নারী শিক্ষার্থীদের একটি প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, যা জাহাঙ্গীরনগরের ইতিহাসে প্রথম। বিভাগের ক্রীড়া শিক্ষক ও সহযোগী অধ্যাপক ড. রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধার প্রচেষ্টায় আয়োজিত এই ম্যাচের মূল উদ্দেশ্যই ছিল স্বৈরাচারী সরকার পতনের পর নতুন বাংলাদেশে পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে সবক্ষেত্রেই সবার সমান সুযোগ তৈরি করা।

রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠে টুর্নামেন্টের প্রথম দিনে ঐতিহাসিক এই নারীদের ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৪৯তম এবং ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত ‘ফার্স্ট অ্যান্ড ফ্যাবুলাস’ এবং ৫০তম ও ৫২তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত ‘কুইন কিংডম’। প্রতিটি দল আটজন করে খেলোয়াড় নিয়ে মাঠে নামে। ৩০ মিনিটের এই ম্যাচটিতে ‘কুইন কিংডম’ প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাতির একমাত্র গোলের মাধ্যমে বিজয়ী হয়।

ম্যাচের শুরুতে দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল্লাহ ভূইয়া বলেন, ‘খেলার মধ্যদিয়ে আমাদের মন-মানসিকতার পরিবর্তন ঘটে। আমরা সকলেই নিপীড়নের বিপক্ষে। খেলাধুলার মাধ্যমে মানুষের মন প্রফুল্ল হয়। মন ভালো থাকলে পড়াশোনা ও আনুষঙ্গিক কাজে মনোনিবেশ করা সহজ হয়। খেলাধুলার মধ্যদিয়ে আমরা সমাজের সকল নিপীড়ন দূর করবো।’

নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী এবং ‘কুইন কিংডম’র খেলোয়াড় অন্নেষা চক্রবর্তী উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এটাই প্রথমবারের মতো নারীদের ফুটবল ম্যাচ এবং সেটা আমাদের বিভাগের উদ্যোগে। আমাদের দল জিতেছে, তাও আবার আমাদের এক বন্ধুর করা গোলে- এটা সত্যিই আনন্দের। আমরা আশা করছি ভবিষ্যতে অন্যান্য বিভাগ নিয়েও আরও টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে পারব।’

বিভাগের চতুর্থ পর্বের শিক্ষার্থী এবং ‘ফার্স্ট অ্যান্ড ফ্যাবুলাস’র গোলকিপার সাবাহ নূরানী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মানসিক সুস্থতার জন্য খেলাধুলা অতীব প্রয়োজন। ছেলেদের সুযোগ থাকলেও মেয়েদের তেমন সুযোগ হয় না। শিক্ষকরা এর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছেন। এজন্য তাদের আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

টুর্নামেন্টের ব্যাপারে বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও ক্রীড়া শিক্ষক ড. রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এটাই প্রথম নারীদের ফুটবল ম্যাচ। আমাদের অনেক প্রতিশ্রুতিশীল নারী খেলোয়াড় রয়েছে। যদি আমরা এমন একটি পরিবেশ তৈরি করতে পারি যেখানে নারীরা ফুটবল খেলতে উৎসাহিত হয়, তারা অবশ্যই ভালো করবে। বিশেষত আমাদের আদিবাসী নারী শিক্ষার্থীরা, যারা ফুটবলে বেশ আগ্রহী। বাঙালি ও আদিবাসী নারী শিক্ষার্থীদের জন্য আরও ফুটবল ইভেন্ট আয়োজনের মাধ্যমে আমরা বিভেদ কমিয়ে ঐক্য বৃদ্ধি করতে পারব।’

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ. কে. এম. রাশিদুল আলম বলেন, ‘আমরা সবসময় চাই যে ছাত্রীরা খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করুক। নৃবিজ্ঞান বিভাগের এই উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্যারের সঙ্গে কথা বলে ছাত্রীরাও যাতে আন্তঃবিভাগ ফুটবল ম্যাচ, আন্তঃহল ফুটবল ম্যাচ খেলতে পারে সেই ব্যবস্থার জন্য উদ্যোগ নেবো।’