
শিক্ষক সংকটে ভুগছে রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী সরকারি বাঙলা কলেজ। বিশেষ করে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং এবং মার্কেটিং বিভাগে বছরের পর বছর ধরে শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। অন্য বিভাগের শিক্ষক দিয়ে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। ফলে এই দুই বিভাগের হাজার শিক্ষার্থী পড়েছেন বিপাকে। এদিকে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দেওয়ার পরও নতুন শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ায় অসন্তোষ দেখা দিয়েছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
জানা গেছে, শুধু ফিন্যান্স ও মার্কেটিং নয়; দর্শন, ভূগোল ও পরিবেশ, আইসিটিসহ মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগেও পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই। যেখানে প্রতি বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর মিলিয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৫০ থেকে ৫৫০ জন। পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় বেশিরভাগ শিক্ষার্থীকেই সেলফ-স্টাডির ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এতে শিক্ষার মান কমার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ওপর চাপও বাড়ছে।
ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী শাওন আহমেদ সৈকত বলেন, ‘আমরা সারা বছর সেলফ-স্টাডির ওপর নির্ভর করতে বাধ্য হচ্ছি। বিশেষ করে ফিন্যান্স ও মার্কেটিংয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে শিক্ষক ছাড়া শেখা অসম্ভব। আমাদের শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।’
মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াদুল ইসলাম ফাহাদ বলেন, ‘শুধু ক্লাসের অভাবই নয়, শিক্ষক না থাকায় আমরা কোনো একাডেমিক দিকনির্দেশনাও পাচ্ছি না। ফলে পড়াশোনায় সঠিক পথ খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক সময় শিক্ষার্থীদের নিজেদের মতো করে বই পড়ে বুঝতে হয়, যা অনেকের জন্য কঠিন হয়ে যায়।’
ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. মোজাম্মেল হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘মার্কেটিং এবং ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগে শিক্ষক না থাকায় ব্যবস্থাপনা ও হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকদের অতিরিক্ত সময় দিয়ে ক্লাস, পরীক্ষা ও একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে। এতে অন্য বিভাগের শিক্ষকদের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ছে, যা দীর্ঘমেয়াদে শিক্ষার মানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।’
চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি মার্কেটিং বিভাগে পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ এবং শিক্ষার সার্বিক মান উন্নয়ন সংক্রান্ত নানা দাবি নিয়ে সচিবালয়ে যান কলেজের মার্কেটিং বিভাগের একটি শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধি দলটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবের সঙ্গে দেখা করে একটি স্মারকলিপি দেয়। এরপরও এর সুরাহা হয়নি।
এসব বিষয় নিয়ে বাঙলা কলেজের অধ্যক্ষ কামরুল হাসান বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের উদ্বেগ সম্পর্কে অবগত। এরইমধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেছি। নতুন শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। শিগগিরই এ সমস্যা সমাধান হবে বলে আশা করছি।’
শিক্ষার্থীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে অধ্যক্ষ বলেন, দ্রুত সমাধানের জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।