
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের বাসভবনে ককটেল বিস্ফোরণ, আবাসিক হলে আল-কোরআন পোড়ানো এবং অ্যাকাডেমিক ভবনে পূজার ব্যানার ছেঁড়াসহ সকল ন্যাক্কারজনক ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে এই কর্মসূচি পালন করে তারা। তবে অভিযোগ, উঠেছে কর্মসূচিতে অধিকাংশ বহিরাগত স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে করা হয়েছে। এ ছাড়া একই দিনে ক্যাম্পাস থেকে একটি সাইকেল চুরি ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন এক শিক্ষার্থী।
আজ রোববার দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বর সংলগ্ন ছাত্রদলের দলীয় টেন্ট থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। পরে তারা একই স্থানে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ছাত্রদলের কর্মসূচিতে রাজশাহীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা অংশগ্রহণ করে। তাদের পরিচয় জানতে চাইলে অধিকাংশই কথা বলতে রাজি হননি। তবে বেশ কয়েকজন জানিয়েছেন কয়েকজন ছাত্রদল নেতার ডাকে ক্যাম্পাসে এসেছেন তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রদলের প্রোগ্রামে অংশ নেওয়া একজন বহিরাগত বলেন, ‘আমি আমার এক বড় ভাইয়ের নেতৃত্বে এসেছি। রাকিন ভাই আমাকে ডেকেছে, তাই তার সম্মানের খাতিরে এই কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছি। এর বেশি কিছু আমি জানি না।’
আজকে ছাত্রদলের কী প্রোগ্রাম?- এমন প্রশ্নের জবাবে আরেক বহিরাগত বলেন, ‘আমি কিছুই জানি না। আমি আসতে চাইনি, আমাকে জোর করে ডেকে আনা হয়েছে। সামনের দিনে ডাকলে আর আসব না।’
এদিকে বহিরাগতদের বিরুদ্ধে সাইকেল চুরির অভিযোগ তুলেছেন আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী আল শাহরিয়ার তারিফ। 'রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ' নামের একটি গ্রুপে তিনি লিখেছেন, ‘আজ সকাল থেকে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে এই বহিরাগত টোকাইরা ছাত্রদলের প্রোগ্রামের উদ্দেশ্যে একত্রিত হয়েছিল। আমার বন্ধুর সাইকেলটি শহীদুল্লাহ কলা ভবনের গ্যারেজে ছিল। ক্লাস শেষ করে ১২টার দিকে নিচে যেয়ে তার সাইকেলটি আর পাইনি। এর আগেও ছাত্রদলের প্রোগ্রামের দিন ক্যাম্পাস থেকে সাইকেল চুরি হয়েছে। বহিরাগতদের বিষয়ে প্রশাসন কবে সতর্ক হবে?’
বিক্ষোভ সমাবেশে বহিরাগতদের অংশগ্রহণ নিয়ে রাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, ‘আমাদের প্রোগ্রামে সবসময় বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ইউনিট অংশ নেয়। আজকেও তারা ছিল। তবে সামাজিক মাধ্যমে যাদের ভিডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়েছে তারা আমাদের দলের কেউ না। আমাদেরকে বিতর্কিত করার জন্য সবসময় একটি গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। তারা এগুলো করছে।‘
কারা বিতর্ক করার জন্য এগুলো করছে বলে মনে হয়- এমন প্রশ্নের জবাবে ছাত্রদলের এই নেতা বলেন, ‘এটা নিষিদ্ধ সংগঠন বা গুপ্ত কোনো সংগঠনের কাজ হতে পারে। তারা এসব বহিরাগতদের হাতে কিছু টাকা দিয়ে আমাদের মিছিলে পাঠিয়ে দিচ্ছে এবং আমাদের বিতর্কিত করছে। ছাত্রদলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য রাজনৈতিক কূটকৌশল ও ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে মিডিয়া ট্রায়ালের মাধ্যমে এটি সাজানো হয়েছে।’
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমি মনে করি এটি অনাকাঙ্ক্ষিত। তাছাড়া সবসময়ই ক্লাস চলাকালীন মিছিল সমাবেশ করতে নিষেধ করে থাকি। কিন্তু ওরা না জানিয়ে মাইক বাজিয়ে এমনটা করেছে আমরা ভাবতে পারিনি। আমাদের সতর্কবার্তা থাকলো, পরবর্তীতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সাইকেল চুরির বিষয়ে প্রক্টর বলেন, ‘একজন শিক্ষার্থী অভিযোগ নিয়ে এসেছিল আমার কাছে। তবে সেখানকার সিসিটিভিতে সংযোগ না থাকায় একটু সমস্যা হয়েছে। আমরা সেটিকে ঠিক করে সমাধানের চেষ্টা করছি।’