রাবির বর্ষবরণে চলছে শেষ মূহুর্তের প্রস্তুতি


রাশেদ রাজন | Published: 2018-04-12 22:39:33 BdST | Updated: 2024-04-28 18:54:07 BdST

সাজিয়ে রাখি বরণডালা তোমার অপেক্ষা করি। তাড়াতাড়ি এস এবার কর না আর দেরী।উঁকি মেরে দেখছ কেন আমরা কেমন আছি। এইতো সবে হয়েছি আজ তোমার কাছাকাছি। হিমের ছোঁয়া লাগে যদি ভয় করছ তাই। মিলেমিশে থাকব মোরা হিমকে ভয় নাই।

আর মাত্র কয়েক দিন পরেই অতীতের সব গ্লানি, দুঃখ, কষ্টকে ভুলে গিয়ে সামনের দিনগুলোকে নতুন রংয়ে নিজেকে সাজিয়ে নিতে বাংলা নববর্ষ ১৪২৫ কে বরণ করতে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পারকরছে সারাদেশের ন্যায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিভিন্ন বিভাগ, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো। স্ব স্ব উদ্যোগে আয়োজন করতে যাচ্ছে র‌্যালি, নাকট মঞ্চস্থসহ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। আবার পান্তা ইলিশের মজাদার খাবারের আয়োজনটিকে বাদ দেবেন না বলে জানা গেছে। নববর্ষের মুল অনুষ্ঠান থাকছে বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদের।

‘মিানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি।’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে দিনব্যাপি কর্মসূচি হাতে নিয়েছে অনুষদটি। ১৪ এপ্রিল শনিবার সকাল ৯টায় চারুকলা বিভাগের সামনে থেকে রাজশাহী অঞ্চলের সবচেয়ে বড় মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হবে। মঙ্গল শোভাযাত্রায় বাঙালির ঐতিহ্য, কৃষ্টি-কালচার তুলে ধরতে তৈরি করা হয়েছে প্রধান মোটিফ ‘বিদ্রোহের প্রতিক’ (ষাঁড়) এবং ‘শান্তির প্রতিক’ (পায়রা)।

আর সাথে থাকছে অশুভ শক্তি দূর কারার প্রত্যায় নিয়ে বড় বড় পাশা, মুকুট ও ২০০টি ব্যতিক্রম ধর্মী মুখোশ। বিকেলে সমবেত সঙ্গীত, লোকসঙ্গীত, বউলসঙ্গীত, নৃত্য, আবৃত্তি, হরবোলা ও অভিনয়।

এবারের মূল আকর্ষণ ষাড় ও পায়রা কারণ জানতে চাইলে চারুকলা অনুষদের বর্ষবরণ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মো.আমিরুল মোমেনীন চৌধুরী ক্যাম্পাস টাইমসকে বলেন, ‘ষাঁড় হচ্ছে বিদ্রোহের প্রতিক। বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ কিন্তু এদেশের বাঙ্গালীয়ানা কৃষি সংস্কৃতির লাঙ্গল, গরুর গাড়ী,ঢেঁকি,কুলা, তালের হাত পাখাসহ প্রায় অধিকাংশ কৃষিজ প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী যন্ত্রপাতিগুলো ব্যবহার থেকে বেরিয়ে এসেছে। যা উন্নত দেশ জাপান কিংবা উন্নয়নশীল রাষ্ট্র ভারত তাদের ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছে। আর তাই সাধারণ মানুষের মধ্যে কৃষি বিপ্লব ঘটাতে এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই উদ্যোগ।

আর পায়রা হচ্ছে শান্তির প্রতিক, বর্তমান সময়ে দেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল, ব্যাংক লুট, অর্থনৈতিক মন্দা, সারাদেশে গুম, খুন, হত্যাসহ নানা কারণে এক অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আর তাই এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে সবাইকে এক হয়ে শান্তির পতাকা তলে আসার আহ্বান করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনুষ্ঠানের শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি চলছে। আশা করছি সবাইকে সুন্দর একটি অনুষ্ঠান উপহার দিতে পারব।’

এ ব্যাপারে চারুকলা অনুষদের কয়েক জন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানাগেছে, ‘অনুষদের পক্ষ থেকে বর্ষবরণ উদযাপন হবে যেটি ভালভাবে পালন করতে নিজ উদ্যোগে কাজ করে যাচ্ছেন তারা। শিক্ষার্থীরা মনে করেন এক সাথে কাজ করার মজাটা অনেকটা চাঁদ রাতের মত।
এদিকে চারুকলা অনুষদ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় বেশির ভাগ বিভাগ বর্ষবরণ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ^বিদ্যালয় সহকারী প্রক্টর প্রফেসর ড. রওশন জাহিদ বলেন, ‘ বর্ষবরণ উপলক্ষে ক্যাম্পাসে অটো রিক্সা ভিতরে চলাচল করতে দেওয়া হবে না। সার্বিক নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে সকল অনুষ্ঠান বিকেল ৫টার মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ক্যাম্পসে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানে থাকতে বলা হয়েছে।’

এইচজে/ ১২ এপ্রিল ২০১৮