ক্যাম্পাসে উত্তেজনা

পোষ্য কোটা বাতিল না করায় রাবি প্রশাসন ভবনে তালা


Abu Saleh Shoeb | Published: 2025-01-02 11:41:21 BdST | Updated: 2025-04-28 23:54:13 BdST

পোষ্য কোটা বাতিলসহ তিন দফা দাবি না মানায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনে তালা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। তারা জানিয়েছে, দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত তালা থাকবে এবং ভবনে কেউ প্রবেশ বা বের হতে পারবে না।

বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মারের নেতৃত্বে ভবনের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।

বিজ্ঞাপন

তাদের অন্য দুই দাবি হলো, ফ্যাসিস্ট শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বিচারের আওতায় আনা এবং দুইজন ফ্যাসিবাদী শিক্ষককে সহকারী প্রক্টর নিয়োগ দেওয়ায় উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারকে কারণ দর্শানো।

এসময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিক সিলেকশন শুরু হতে যাচ্ছে আগামী ৫ জানুয়ারি। তাই আমরা ফাইনাল একটি সিদ্ধান্তে আসার জন্য ২ জানুয়ারি পর্যন্ত সাতদিনের আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম। তার পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। আমরা তাদের ১ শতাংশ কোটা রাখার সিদ্ধান্তকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছি।

আম্মার আরো বলেন, এই প্রশাসনের দায়িত্ব শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি বাস্তবায়ন করা, তাবেদারি করা নয়। যদি শিক্ষার্থীদের দাবি অন্যায় মনে হয়, তবে আপনারাই প্রকৃত ফ্যাসিস্ট। শুধু আওয়ামী লীগ নয়, ভেতরে যারা অযৌক্তিক বিষয়কে যৌক্তিক করার চেষ্টা করছেন, তারাও ফ্যাসিস্টের দালাল। পোষ্য কোটা বাতিল করুন, আওয়ামী লীগের দোসরদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিন, আর নিয়োগে অনিয়মের জন্য রেজিস্ট্রার ও ভিসিকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় ছুটি যাই হোক, প্রশাসনিক ভবনে তালা থাকবে।

এ বিষয়ে রাবি উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, আমরা সার্বিক বিচার বিশ্লেষণ করে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির সাধারণ কর্মচারীদের জন্য ১% কোটা রেখেছি। আসলে আপনারা যদি খোঁজ নেন দেখতে পাবেন তাদের জন্য এটা রাখা যৌক্তিক। তাদের অবস্থা ভালো হয়ে গেলে আগামীতে এটাও বাতিল করা হতে পারে। তবে এবছর ১% বহাল থাকবে।

বিজ্ঞাপন

আওয়ামীলীগের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিষয়ে তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া শাস্তি দেওয়ার অধিকার আমাদের নেই। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসলে অবশ্যই আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব। এছাড়া আওয়ামীলীগের দুই শিক্ষককে সহকারী প্রক্টর নিয়োগের ক্ষেত্রে তথ্যগত ক্রুটি ছিল বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর ঘটবে না সে বিষয়ে প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে বলেন জানান উপাচার্য।

এর আগে বুধবার (১ জানুয়ারি) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে এক সংবাদ সম্মেলনে সালাউদ্দিন আম্মার ঘোষণা দেন, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার মধ্যে দাবি মানা না হলে প্রশাসন ভবনে তালা লাগিয়ে দেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, বুধবার দুপুরে অনুষ্ঠিত ভর্তি কমিটির জরুরি সভায় তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের সন্তানদের এক শতাংশ কোটা বরাদ্দ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। কমিটির সভাপতি উপাচার্য প্রফেসর সালেহ্ হাসান নকীব সভায় সভাপতিত্ব করেন। এমন সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।