করোনায় মৃতের সংখ্যা একশ’ ছাড়াল, নতুন শনাক্ত ৪৯২


ডেস্ক রিপোর্ট | Published: 2020-04-20 23:34:09 BdST | Updated: 2024-05-07 15:05:30 BdST

দেশে করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০১ জনে। করোনায় আক্রান্ত হিসেবে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৪৯২ জন। ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হয়েছে দুই হাজার ৯৪৮।

এছাড়া সুস্থ হয়ে উঠেছেন আরও ১০ জন। ফলে করোনা থেকে মোট সুস্থ হয়েছেন ৮৫ জন।

সোমবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। অনলাইনে বুলেটিন উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা, তার সঙ্গে ছিলেন অধিদফতরের কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শহীদুল্লাহ।

ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় দুই হাজার ৭৭৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। সব মিলিয়ে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৬ হাজার ৬০৪টি। নতুন যে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে তার মধ্যে আরও ৪৯২ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ফলে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৯৪৮-এ। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ১০ জন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১০১ জনে। এছাড়া সুস্থ হয়ে উঠেছেন আরও ১০ জন। ফলে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা ৮৫ জন।

তিনি জানান, নতুন করে মৃত ১০ জনের মধ্যে পুরুষ আটজন এবং নারী দুজন। বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এ ১০ জনের মধ্যে ষাটোর্ধ্ব চারজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব চারজন এবং চল্লিশোর্ধ্ব দুজন। তাদের মধ্যে রাজধানী ঢাকায় মারা গেছেন পাঁচজন, নারায়ণগঞ্জে চারজন এবং নরসিংদীতে একজন মারা গেছেন।

নতুন আক্রান্ত ৪৯২ জনের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক ১৯ দশমিক ৫ শতাংশ রোগী গাজীপুরের।কিশোরগঞ্জের ১৩ দশমিক ৫ শতাংশ এবং নরসিংদীর রোগী ৬ শতাংশ। আগের মতোই বেশি রোগী ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের।

বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ৫৭ জনকে। বর্তমানে মোট আইসোলেশনে আছেন ৭১৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৪০ জন। এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫৭৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় হোম কোয়ারেন্টোইনে নেয়া হয়েছে ৩০ হাজার ৮০৯ জনকে। এ পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে এক লাখ ৪৯ হাজার ৬২৬ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টোইনে নেয়া হয়েছে ২৭০ জনকে। এ পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে পাঁচ হাজার ৫৮৮ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় মোট কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ৩১ হাজার ৭৯ জনকে এবং এ পর্যন্ত নেয়া হয়েছে এক লাখ ৫৫ হাজার ৯৪০ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় হোম কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন এক হাজার ৫৪৫ জন এবং এ পর্যন্ত মোট ছাড়পত্র পেয়েছেন ৭৫হাজার ৮১২ জন। বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৭৫ হাজার ৭৪৭ জন এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে আছেন চার হাজার ৬৫৫জন। সব মিলিয়ে বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৮০ হাজার ৪০২ জন।

বুলেটিনে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শহীদুল্লাহ পিপিইসহ চিকিৎসা সামগ্রী গ্রহণ এবং তা চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে বিতরণের তথ্য তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, দু-এক সপ্তাহের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য ডেডিকেটেড হাসপাতালসহ সারাদেশের হাসপাতালে এন-৯৫-এর সমমানের মাস্ক সরবরাহ করা সম্ভব হবে। বর্তমানে সরবরাহ সীমিত থাকায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরামর্শ অনুযায়ী নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) ও পিসিআর এবং কিছু হাসপাতালের ওয়ার্ডে এন-৯৫ সরবরাহ করা হচ্ছে। এখন দেশে প্রতিদিন এক লাখ উন্নতমানের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) উৎপাদন ও সরবরাহ করা হচ্ছে।

বুলেটিন উপস্থাপনকালে করোনার বিস্তাররোধে সবাইকে বাড়িতে থাকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।

গত ডিসেম্বরের শেষে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস এখন গোটা বিশ্বে তাণ্ডব চালাচ্ছে। চীন পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দিয়ে উঠলেও এখন ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সাড়ে ২৪ লাখ ১৪ হাজারেরও বেশি। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে এক লাখ ৬৫ হাজার। তবে সোয়া ছয় লক্ষাধিক রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।

গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর প্রথম দিকে কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর মিললেও এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। সবশেষ হিসাবে দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দুই হাজার ৯৪৮। মারা গেছেন ১০১ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৮৫ জন।

প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি নানা সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে; যার মূলে রয়েছে মানুষে মানুষে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। মানুষকে ঘরে রাখতে রাজপথের পাশাপাশি পাড়া-মহল্লায় টহল দিচ্ছে সশস্ত্র বাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশ।