বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষে শিক্ষার্থীরা


Desk report | Published: 2024-08-11 10:01:47 BdST | Updated: 2024-09-17 00:57:31 BdST

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ চান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তবে এর বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে সরাসরি ছাত্ররাজনীতি চালুর দাবি জানিয়েছে গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল ও ছাত্রদল। যদিও সাধারণ শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনগুলো ক্যাম্পাসে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের রাজনীতি বন্ধের দাবিতে একমত পোষণ করেছে।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দলীয় লেজুড়বৃত্তি ও ছাত্ররাজনীতির দৌরাত্ম্যে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কোণঠাসা হয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে কোনো যৌক্তিক দাবি উঠলেও সরকার দলীয় ছাত্রসংগঠন তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির দাপট দেখিয়ে নেতারা হল দখল, চাঁদাবাজি, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও নির্যাতন করে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশকে বিঘ্নিত করে। এতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পরিবেশও নষ্ট হয়।

এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৬ শতাংশ শিক্ষার্থী মনে করে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির থাকা উচিত নয়। মাত্র ২ শতাংশ শিক্ষার্থী মনে করে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি থাকা উচিত। লিংকার্স ইন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজিত ভোটে তিন হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেয়।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিভিন্ন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবর্তন আসছে। দৃশ্যমান হয়েছে কর্তৃপক্ষের নানা পদক্ষেপও। কিন্তু বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবর্তন কিংবা সংস্কার দেখা যায়নি। এসবের পেছনে শিক্ষার্থীরা অন্যতম কারণ হিসেবে দেখছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়কদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান হাসিব বলেন, ‘শত শত শিক্ষার্থী ও নিরীহ মানুষের প্রাণের বিনিময়ে আমরা বিজয় পেয়েছি। আমরা নতুন করে স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছি। এ বিজয় আমরা মলিন হতে দিতে পারি না। আমরা চাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হোক জ্ঞানচর্চার প্রাণকেন্দ্র। এখানে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে থাকুক মধুর সম্পর্ক। কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনীতি সবচেয়ে বড় বাধা। এ অপরাজনীতির জন্য আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয় এবং পড়াশোনার পরিবেশ থাকে না। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চিরতরে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন।’

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক শহিদুল ইসলাম শাহেদ বলেন, ‘সমন্বয়কদের মধ্যে একটি অংশ তাদের রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য সাধারণ শিক্ষার্থীরা কোনো দাবি-দাওয়া প্রশাসনের কাছে তুলতে পারছেন না।’

গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি সিবাদ আহম্মেদ বলেন, ‘আমরা দলীয় ছাত্ররাজনীতির বিপক্ষে। ক্যাম্পাসে সুষ্ঠুধারার সংস্কারমূলক ছাত্ররাজনীতির চর্চা হোক, সেটা আমরা চাই।’

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি মো. রেজা শরীফ বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু সংস্কারমূলক ছাত্ররাজনীতির পক্ষে। যে ছাত্ররাজনীতি হল দখল করবে না, চাঁদাবাজি করবে না, সর্বোপরি সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে কাজ করবে।’

সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ চায় বিষয়টা কীভাবে দেখছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দেড় দশক ধরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির নামে যে অপরাজনীতি হয়েছে, এজন্য শিক্ষার্থীরা ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষে। কিন্তু আমরা এ অপরাজনীতির বিরুদ্ধে। সুস্থ ধারার রাজনীতি চালু করতে চাই, আশা করি সেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোনো আপত্তি থাকবে না।’