সম্মিলিত ইফতার যেন ঢাবির ঐতিহ্য


DU Correspondent | Published: 2024-03-12 19:21:17 BdST | Updated: 2024-04-27 16:31:14 BdST

শুরু হয়েছে মুসলমানদের পবিত্র রমজান মাস। রমজানে বিশেষত ইফতারকে ঘিরে একটি রবরব পরিবেশ বিরাজ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। সবাইকে দলবেঁধে ইফতার কেনা ও ইফতার আয়োজন সম্পন্ন করতে দেখা যায়। সম্মিলিত ইফতার যেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ঐতিহ্য হিসেবে পরিণত হয়েছে।

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) প্রথম রোজায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ইফতার কেনা-বেচা ও ইফতার আয়োজনের ধুম দেখা যায়। আসর নামাজ পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীরা ইফতারিতে কী খাওয়া যায়, এর পরিকল্পনা শুরু করেন। এছাড়া সম্মিলিত ইফতারের জন্য কে কী দায়িত্ব পালন করবে সেটি নিয়েও আলোচনা করতে দেখা যায়।

এরপর হলের ক্যান্টিনসহ আশেপাশের দোকান থেকে অনেককে ইফতার সামগ্রী যেমন— ছোলা, মুড়ি, পেঁয়াজু, জিলাপি ও বেগুনি কেনার জন্য ছুটতে দেখা যায়। যারা ইফতারে আ‌রও কিছু যোগ করতে চান, তারা কলা, আনারস, তরমুজ, বাঙ্গি, লিচুসহ হরেক রকম মৌসুমি ফল কেনেন।

ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসিম উদ্দিন হল, বিজয় একাত্তর হল, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের ভেতরে এবং শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলসহ কয়েকটি হলের গেটের সাম‌নেই বাহা‌রি ইফতা‌রির পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। তাছাড়া মেয়েদের পাঁচটি হলের ভেতরেও দোকানিরা ইফতারির পসরা সাজিয়ে বসেছেন।

প্রতিবারের মতো হলপাড়া বা টিএসসিসহ ক্যাম্পাসের রাস্তায় ইফতারির দোকানগুলো বসতে দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বহিরাগত দোকানি ও হকাররা যেন ক্যাম্পাসে অনুপ্রবেশের সুযোগ না পায়, সেজন্যই এই ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। তবে ইফতার কিনতে শিক্ষার্থীদের যেন কোনো ঝামেলা পোহাতে না হয়, সেজন্য হলের ভেতরেই দোকান মালিকরা ইফতার তৈরি করে বিক্রি করছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মাঠ, জহুরুল হক হল মাঠ, সূর্যসেন, জসীমউদ্দিন, মুহসীন হলের ভেতরের প্রাঙ্গণে ইফতার নিয়ে শিক্ষার্থীদের বসে থাকতে দেখা যায়। ইফতার আগ মুহূর্তের প্রস্তুতি সম্পন্ন করছেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাসেল বলেন, রমজান শুরু হলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুরা মিলে ইফতার করে থাকি। প্রতি রমজানেই জুনিয়র-সিনিয়র সবাই একসাথে ইফতার করি। এটা অন্যরকম একটা আমেজের সৃষ্টি করে। এ যেন উৎসব ও ঐতিহ্যের অংশ।

জহুরুল হক হলে ইফতার বিক্রি করা এক দোকানি বলেন, হলের শিক্ষার্থীরা আসছে, ইফতার কিনছে। অনেকে একসাথে ইফতার করার দাওয়াত দিচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে দেখে আসছি রমজান মাসটা আসলে হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অন্যরকম একটা আনন্দ কাজ করে।

এদিকে, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) ও নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) ইফতার পার্টি নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে গণ ইফতার কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা পায়রা চত্বরে বসে একসাথে ইফতার করতে জড়ো হন। এ সময় শিক্ষার্থীরা নোবিপ্রবি ও শাবিপ্রবি প্রশাসনের গৃহীত পদক্ষেপের প্রতিবাদ জানান।