
দাফনের এক সপ্তাহ পর কবর থেকে তোলা হলো রাজধানীর শ্যামলী আইডিয়াল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের ছাত্র নাজমুল হাসান সৌরভের (১৮) মরদেহ।
রোববার (২৭ মে) দুপুরে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার বনগ্রাম পারিবারিক কবরস্থান থেকে মরদেহ উত্তোলনের পর ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
এ সময় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট বিল্লাল হোসেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মাইকেলসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সৌরভের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, গত ১৯ মে রাজধানীর আদাবরের হোস্টেলে মৃত্যু হয় সৌরভের। কর্তৃপক্ষ জানায়, সৌরভের মৃত্যু হয়েছে বিদ্যুতায়িত হয়ে। ওই দিন সৌরভকে ময়নাতদন্ত ছাড়াই গ্রামের বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এর দুদিন পর সৌরভকে হত্যা করা হয়েছে সন্দেহ করে আদাবর থানায় মামলা করেন তাঁর বাবা আমজাদ হোসেন। এর পরই মৃতদেহ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করেন তিনি।
সৌরভের বাবা আমজাদ হোসেন মামলায় উল্লেখ করেছেন, তাঁর ছেলে আদাবর থানাধীন মোহনপুর এলাকার আইডিয়াল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র হোস্টেলে থাকত। গত ১৯ মে ভোর রাতে হোস্টেল সুপারভাইজার মো. নয়ন তাঁকে ফোন করে জানান, সৌরভ বিদ্যুতায়িত হয়ে আহত হয়েছেন। তাঁকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। খবর পেয়ে সকালে তিনি হাসপাতালে গেলে হাসপাতাল মর্গের ট্রলির ওপর চাদর দিয়ে ঢাকা সৌরভের লাশ দেখতে পান। সেখানে হোস্টেল সুপার নয়ন, শিক্ষক ও তার কয়েকজন সহপাঠী উপস্থিত ছিল। পরে তাদের পরামর্শে সৌরভের লাশ মানিকগঞ্জের গ্রামের বাড়িতে এনে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়েছে, সৌরভের কাপড়-চোপড় আনতে হোস্টেলে গেলে তার রুমের সামনে রক্তের দাগ দেখতে পান আমজাদ হোসেন। দাফনের জন্য গোসল করানোর সময়ও শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। তাই তিনি ধারণা করছেন, হোস্টেল কর্তৃপক্ষ কিংবা সহপাঠীরা সৌরভকে হত্যা করেছে।
সৌরভের বোন ঊর্মি হোসেন জানান, তাঁর ভাই খুবই শান্ত প্রকৃতির ছিলেন। ঘটনার দুইদিন আগে পুলিশী ঝামেলায় পড়েছে জানিয়ে বাড়ি থেকে বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা নেন। পরে মাকে ফোনে জানান, হোস্টেলের কয়েকজন তাঁর টাকা নিয়েছে। রোজার পর তাদের একটা ব্যবস্থা করবে সে।
ঊর্মি আরো জানান, মৃত্যুর পর সৌরভের পায়ে ধুলাবালি দেখা গেছে। বুকে আঘাতের চিহ্ন এবং পেট ফোলা ছিল। এসব থেকেই ধারণা করা হয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি ভাই হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
টিআই/ ২৭ মে ২০১৮