বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্যের পদত্যাগে শিক্ষার্থীদের আনন্দের বন্যা


টাইমস ডেস্ক | Published: 2019-10-02 06:01:18 BdST | Updated: 2024-05-17 18:17:58 BdST

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশবিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) উপাচার্যের পদত্যাগের পর চলমান আন্দোলন স্থগিত করে আনন্দ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সকালে ক্যাম্পাসে আনন্দ মিছিল করে উল্লাস প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জয়বাংলা চত্বরে সংবাদ সম্মেলন করে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে উপাচার্যের দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ডে সহযোগিতাকারীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তারা।

টানা ১২ দিন আন্দোলনের মুখে ভিসির পদত্যাগে শিক্ষার্থীদের মাঝে ছিল আনন্দের বন্যা। দ্রুত নতুন ভিসি নিয়োগের মাধ্যমে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। ভিসির পদত্যাগের খবরে শিক্ষার্থীদের মাঝে আজ ছিল আনন্দের বন্যা। তারা একে অপরকে রং মেখে, মিছিল করে যে যার মত আনন্দ উল্লাস করেছে। বাজনার তালে তালে নেচে গেয়েও উল্লাসে ফেটে পড়ে। তবে আন্দোলন স্থল ছিল পুরো ফাঁকা। ছিল না কোন স্লোগান। নতুন ভিসির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসবে এমনটাই মনে করছে শিক্ষার্থীরা।

উপাচার্য নাসিরের পদত্যাগে শিক্ষার্থীদের আনন্দের বন্যা

 

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে টানা ১২ দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছিল শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের মুখে সোমবার দুপুরের পর ভিসি খোন্দকার নাসিরউদ্দিন পদত্যাগপত্র জমা দেন।

এরআগে বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্য প্রত্যাহার করার সুপারিশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তদন্ত কমিটি।

ইউজিসির পাঁচ সদস্যের গঠিত কমিটি ভিসির বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদনটি গতকাল সংস্থাটির চেয়ারম্যানের কাছে জমা দেয়। পরে সেটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। প্রতিবেদনে ভিসির বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমাণ হয়েছে উল্লেখ করা হয়। একই সঙ্গে তিনি সুষ্ঠুভাবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতে যোগ্য নয়, তাই তাকে ভিসি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। এছাড়াও দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তার বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও সুপারিশ করে এই কমিটি।

এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির সদস্য প্রফেসর ড. মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিদর্শন করে সকলের সঙ্গে কথা বলে আমাদের তদন্ত প্রতিবেদন তৈরী করেছি। সেটি ইতোমধ্যে ইউজিসি চেয়ারম্যানের কাছে জমা দিয়েছি, এবং তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তবে সেখানে গিয়ে বিশ্বিবিদ্যালয় পরিচালনার জন্য ভালো কিছু আমরা দেখিনি। সুতরাং বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যেটি মঙ্গলজনক হবে সেটিই আমরা সুপারিশ করেছি। এ বিষয়ে শক্ত প্রতিবেদনই আমরা দিয়েছি। কারণ আমাদের কাছে মনে হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে সুষ্ঠু পরিবেশ নেই।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর মন্ত্রণালয় চিঠি পাওয়া পর পরদিন ২৪ সেপ্টেম্বর ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আলমগীরকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন ইউজিসি সদস্য ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন ও ড. দিল আফরোজ বেগম এবং ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক কামাল হোসেন এবং একই বিভাগের উপপরিচালক মৌলি আজাদ।

কমিটি দায়িত্ব পাওয়ার পর ২৫ সেপ্টেম্বর (বুধবার) বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সরজমিন পরিদর্শনে যান। পরিদর্শনে গিয়ে সেখানে দুইদিন অবস্থান করেন এবং ২৭ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) ঢাকা ফিরে এসে ওই দিনই তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করে ইউজিসির কাছে জমা দেন।

টিআই/ ০১ অক্টোবর ২০১৯