ঢাবি শিক্ষক সামিয়া-মারজানের চৌর্যবৃত্তি প্রমাণিত, শাস্তি দিতে ট্রাইবুনাল গঠন


ঢাবি টাইমস | Published: 2020-09-10 08:14:14 BdST | Updated: 2024-06-29 07:19:04 BdST

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ এবং সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিয়া রহমান ও ক্রিমিনোলজি বিভাগের প্রভাষক সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজানের বিরুদ্ধে গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযোগ উঠার তিন বছরের মাথায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এজন্য গঠন করা হয়েছে ট্রাইব্যুনাল।

বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত সিন্ডিকেট সভায় এই ট্রাইব্যুনাল গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই ট্রাইব্যুনালেই তাদের শাস্তি নির্ধারণ করা হবে। পরবর্তীতে ট্রাইব্যুনালের সুপারিশ সিন্ডিকেট সভায় উঠলে শাস্তির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বিষয়টি সিন্ডিকেট সদস্য ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মাদ হুমায়ুন কবির নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির প্রমাণ পাওয়া গেছে। এজন্য আজকের সিন্ডিকেট থেকে ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে। তাদের জন্য কি শাস্তি নির্ধারণ করা হবে তা ওই ট্রাইব্যুনাল নির্ধারণ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানাবে। তারপর সিন্ডিকেটে সেটা উঠলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আসলে আজকের সিন্ডিকেট সভায় অনেক এজেন্ডা ছিল। এখন কিছু বললে জটিলতা লেগে যায় কি না- তাই বলা যাচ্ছে না। আগামীকাল আমরা সবকিছু গুছিয়ে বিজ্ঞপ্তি আকারে জানিয়ে দেব।’

বহুল পরিচিত সংবাদ আলোচক

জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাবির সিন্ডিকেট সভায় গবেষণা ও নিবন্ধে লেখা চুরির অভিযোগে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক সামিয়া রহমান এবং ক্রিমিনোলজি বিভাগের মাহফুজুল হক মারজানের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এরপর গত বছরের নভেম্বরের শেষের দিকে তদন্ত কমিটি এ অভিযোগের সত্যতা পায়। সেই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আজকের সিন্ডিকেটে ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে। সামিয়া রহমান শিক্ষকতার পাশাপাশি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের হেড অব কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স পদে কর্মরত রয়েছেন।

জানা যায়, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে বিদেশি একটি জার্নালের পক্ষ থেকে তাদের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ এসেছিল। সাঈদ একাডেমি অব প্যালেস্টাইন থেকে করা ওই অভিযোগে বলা হয়, ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক সামিয়া রহমান এবং ক্রিমিনোলজি বিভাগের শিক্ষক মাহফুজুল হক মারজানের লেখা ‘এ নিউ ডাইমেনশন অব কলোনিয়ালিজম অ্যান্ড পপ কালচার: এ কেস স্ট্যাডি অব দ্যা কালচারাল ইমপেরিয়ালিজম’ আর্টিকেলের ৮৯, ৯০ ও ৯১ পৃষ্ঠায় এডওয়ার্ড সাঈদের ‘কালচার অ্যান্ড ইমপেরিয়ালিজম’ এর ৫, ৬, ৬৬, ৬৭, ৬৮ এবং ১১৯ নম্বর পৃষ্ঠা থেকে কপি করা হয়েছে।

মারজান

সামিয়া ও মারজানের আর্টিকেল ‘এ নিউ ডাইমেনশন অব কলোনিয়ালিজম অ্যান্ড পপ কালচার: এ কেস স্ট্যাডি অব দ্যা কালচারাল ইমপেরিয়ালিজম’ ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে ঢাবির সোশ্যাল সায়েন্স রিভিউ নামের একটি জার্নালে প্রকাশিত হয়।

এর আগে অভিযোগ ওঠে, ফরাসি দার্শনিক মিশেল ফুকোর ‘দ্যা সাবজেক্ট অ্যান্ড পাওয়ার’ নামের একটি আর্টিকেল থেকে সামিয়া রহমান ও মারজান লেখা চুরি করেছেন। ১৯৮২ সালের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নাল ‘ক্রিটিক্যাল ইনকোয়ারি’র ৪ নম্বর ভলিউমের ১৯ নম্বর পৃষ্ঠায় ফুকোর এই আর্টিকেলটি প্রকাশিত হয়েছিল।