ঢাবির ৮৩১ কোটির বাজেট : বেতন-ভাতাতেই খরচ ৬১১ কোটি


ঢাকা | Published: 2021-06-25 02:59:02 BdST | Updated: 2024-05-17 10:22:30 BdST

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ৮৩১ কোটি ৭৯ লাখ টাকার বাজেট অনুমোদন করা হয়েছে। এবার বাজেটে গবেষণা খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১১ কোটি ১২ লাখ টাকা। যা মোট বাজেটের ১ দশমিক ৩২ শতাংশ।

আর বরাবরের মতো এবারও বাজেটে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ সর্বোচ্চ ৬১১ কোটি ৮৯ লাখ ৬৫ হাজার টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। যা মোট বাজেটের ৭৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত সিনেট অধিবেশনে এ বাজেট পাস করেন সিনেট সদস্যরা।

অধিবেশনে বাজেট পেশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দীন আহমেদ। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন সিনেটের চেয়ারম্যান উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান।

বিজ্ঞাপন


এছাড়া উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এনামউজজামানসহ সিনেট সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। তবে সিনেটের সদস্য পদের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় এ অধিবেশনে কোনো শিক্ষক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না।

জানা গেছে, মোট বাজেট ৮৩১ কোটি ৭৯ লাখ টাকার মধ্যে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ সর্বোচ্চ ৬১১ কোটি ৮৯ লাখ ৬৫ হাজার টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছে। যা মোট বাজেটের ৭৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ। অন্যদিকে গবেষণা খাতে বরাদ্দ রাখা হযেছে ১১ কোটি ১২ লাখ টাকা। যা মোট বাজেটের ১ দশমিক ৩২ শতাংশ।

বাজেটে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে পাওয়া অনুদান দেখানো হয় ৬৯৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। বাজেটে ঘাটতি দেখানো হয়েছে ৭০ কোটি ২৫ লাখ টাকা, যা প্রাক্কলিত ব্যয়ের ৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ। বাজেটে পণ্য ও সেবা খাত বাবদ ১৬৮ কোটি ৮ লাখ ৩৫ হাজার, যা মোট ব্যয়ের ২০ দশমিক ২০ শতাংশ, মূলধন খাতে ২১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা, যা মোট ব্যয়ের ২ দশমিক ৬১ শতাংশ।

তবে বিগত বছরগুলোর চেয়ে এবার বাজেটের আকার কমেছে। গতবছর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট বরাদ্দ ছিল ৮৬৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। এবারের বাজেটে বিশ্ববিদ্যালয়ে করোনাকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইউজিসি থেকে কোনো বরাদ্দ রাখা হয়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সামান্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনার দাবি

এদিকে, সিনেট অধিবেশনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক-অনাবাসিক সব শিক্ষার্থীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে টিকার আওতায় এনে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন ছাত্র প্রতিনিধিরা।

একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের সময়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেয়া হলের আবাসিক ফি, পরিবহন ফি মওকুফ, ডাকসু নির্বাচনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বিনা কারণে পুলিশ কর্তৃক শিক্ষার্থীদের ধরে নিয়ে যাওয়া রোধ করা, অছাত্রদের হলে থাকতে না দেয়া ও ‘সাময়িক বহিস্কারের’ সময়সীমা বেধে দেয়ার বিষয়ে প্রস্তাব করেন তারা।

ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষায় ডাকসু নির্বাচনের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপন স্বার্থক হতো। এই ধারাবাহিকতা রক্ষায় উপাচার্য যথাযথ পদক্ষেপ নেবেন বলে আশা রাখছি।’

নুর বলেন, ‘দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সুতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। যেহেতু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, তাই এখানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী হস্তক্ষেপ করতে গেলে প্রশাসনের অনুমতির প্রয়োজন হয়। কিন্তু সম্প্রতি আমরা দেখেছি- বিনা কারণে পুলিশ টিএসসি থেকে ছাত্রদেরকে ধরে নিয়ে গেছে। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসনের পরিপন্থী। এই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার জন্য উপাচার্যের নিকট আহ্বান জানাচ্ছি।’

ডাকসুর সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘসময় ধরে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও সেবা না দিয়েই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আবাসন ও পরিবহন ফি নেয়া হচ্ছে। করোনার কারণে শিক্ষার্থীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। ফলে এসব ফি সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করার দাবি জানাচ্ছি। একইসঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকার্যক্রম শুরুর দাবি জানাচ্ছি।’