টাইমস হায়ার র‌্যাংকিংয়ের মূল্যায়ন প্রশ্নবিদ্ধ: রাবি প্রশাসন


RU Correspondent | Published: 2023-06-24 15:08:57 BdST | Updated: 2024-05-17 18:18:18 BdST

এশিয়ার ৩১টি দেশের ৬৯৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল্যায়নের ভিত্তিতে যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী টাইমস হায়ার এডুকেশন (টিএইচই) ‘এশিয়া ইউনিভার্সিটি র‍্যাংকিং-২০২৩’ প্রকাশ করেছে। প্রকাশিত র‍্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম এসেছে। এছাড়া আরও ১০টি বিশ্ববিদ্যালয় তালিকায় থাকলেও কোথাও নাম খুঁজে পাওয়া যায়নি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, এটি একটি প্রশ্নবিদ্ধ মূল্যায়ন। ‘টাইমস হায়ার এডুকেশন’-এর সাথে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়ালি কোনো যোগাযোগ নেই। তারা কোন নিয়ামকের ভিত্তিতে এই র‌্যাংকিং প্রকাশ করেছে তা প্রশাসনের জানা নেই। র‌্যাংকিং প্রকাশের আগে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে কোনো তথ্য চাইনি।

বৃহস্পতিবার (২২ জুন) প্রকাশিত এই তালিকায় দেশের বিশ্ববিদ্যালগুলোর মধ্যে শীর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। দেশের প্রথম বেসরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি র‍্যাংকিংয়ে অংশগ্রহণ করে দ্বিতীয় হয়ে প্রথমবারই করেছে বাজিমাত। এছাড়া বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) নাম এসেছে র‌্যাংকিংয়ে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, টাইমস হায়ার এডুকেশন প্রকাশিত এযাবৎ যত ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‌্যাংকিং প্রকাশ করেছে তাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান একেবারেই নেই। ২০২৩ সালে প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‌্যাংকিংয়ে দেশের ১২টি সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় জায়গা করে নিলেও নাম আসেনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের।

এর আগে ২০২২ সালে দেশের মোট ৬টি সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম আসলেও তালিকাভুক্ত হয়নি প্রাচ্যের ক্যামব্রিজ খ্যাত এই শিক্ষালয়ের। এছাড়া ২০২১ সালে প্রকাশিত র‌্যাংকিংয়েও নাম আসেনি বিশ্ববিদ্যালয়টির।

আইবিএ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. হাসানাত আলি বলেন, প্রথমে দেখতে হবে এই ধরনের প্রতিষ্ঠান আগে আদৌ কোনো র‍্যাংকিং প্রকাশ করেছে কি না। তবে হ্যাঁ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো উন্নত হয়েছে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু সেই অর্থে গবেষণা খাতে বরাদ্দ একেবারেই অপ্রতুল। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যদি ভালো র‍্যাংকিং করতে হয়, তাহলে তার মূল লক্ষ্য হতে হয় ভালো মানের গবেষণা। যেটি সমাজ ও জাতির উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। তাছাড়া নিয়মিত জ্ঞান-বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখা যেমন ওয়ার্কশপ, সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম আয়োজন করা। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যে এগুলো হচ্ছে না তা নয়, কিন্তু আন্তর্জাতিক মানের সেমিনার বেশি বেশি আয়োজন করা প্রয়োজন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, এই প্রতিষ্ঠানটি কাদের তথ্যের ভিত্তিতে এই র‍্যাংকিং প্রকাশ করেছে তা আমাদের জানা নেই। তাছাড়া তারা র‌্যাংকিং প্রকাশ করার জন্য আমাদের কাছে কোনো তথ্য চায়নি। তাদের সাথে আমাদের অফিসিয়ালি কোনো যোগাযোগ নেই। কিছুদিন আগেও ওয়েবমেট্রিক্সের বিশ্ববিদ্যালয় র‍্যাংকিং ২০২৩-এর সংস্করণে (জানুয়ারি) দেশের মধ্যে রাবির অবস্থান দ্বিতীয়। তাহলে টাইমস হায়ার এডুকেশনের র‌্যাংকিংয়ে রাবির নাম নেই কেন? যারা এই র‌্যাংকিং করেছে তাদের আসলে র‌্যাংকিং আছে কি না সেটা দেখার বিষয়। তারা আমার বিশ্ববিদ্যালয়কে যেখানে সেখানে স্থান করিয়ে দেবে, সেটা তো আমরা অতি সহজে মেনে নেবো না।

তিনি বলেন, তবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের এখনো অনেক কিছুর ঘাটতি আছে। সেইগুলো তারা তুলে ধরুক। র‌্যাংকিং করতে হলে কী কী করতে হবে সেগুলো আমাদের না জানিয়ে র‌্যাংকিং করে দেবে এটা তো মানা যায় না। এই র‌্যাংকিংয়ের কোনো নিয়ামক সম্পর্কে আমাদের ধারণা নেই। গত বছর গবেষণায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এক নম্বরে অবস্থান করেছে। তাহলে গবেষণা তো কম হচ্ছে না। এটি একটি প্রশ্নবিদ্ধ মূল্যায়ন।