রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেছেন, ‘আমি যদি ছোটবেলা ফুলকুঁড়ির সঙ্গে থাকতে পারতাম, তাহলে আমার মায়ের জীবনটা সহজ হতো। দুষ্টামি কম করতাম এবং মাকে কম জ্বালাতাম।’
শনিবার (২ নভেম্বর) সকাল ৯টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এম. এ. ওয়াজেদ মিয়া একাডেমিক ভবনের, ইঞ্জিনিয়ারিং গ্যালারীতে অনুষ্ঠিত ফুলকুঁড়ি আসরের সুবর্ণ জয়ন্তী, শিশু-কিশোর সমাবেশ ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানটি কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হয়। পরে পরিবেশ বাঁচানো নিয়ে গ্রাফিতি, শর্টফিল্ম, জাতীয় সঙ্গীত, গান ও কবিতা পরিবেশিত হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য আরও বলেন, আমাদের দেশে একটি সংগঠন ফুলকুঁড়ি গত পঞ্চাশ বছর ধরে চলছে এবং শিশুদের জন্য কাজ করছে। এমন সংগঠন আর আছে কিনা আমার জানা নেই। এই সংগঠনের ভয়ংকর জীবনীশক্তি আছে। এগুলোই একটি সংগঠনকে বাঁচিয়ে রাখে। ফুলকুঁড়ি এই মুহূর্তে লাখের উপরে শিশু কিশোর নিয়ে চলছে। এটা একটা বিশাল সংখ্যা। আমরা একটু চেষ্টা করলে ১০-১৫ লাখে নিয়ে যেতে পারব।
শিশুদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তোমরা যদি তোমাদের বন্ধুদের বলো, কি ধরনের কার্যক্রম হয়, তাহলে সকলেই আসতে পারবে এবং উপকৃত হতে পারবে। তোমরা একেবারেই ছোট, তবে তোমাদের কিছু না কিছু করার আছে। আজকে যারা পুরস্কার পেয়েছো, তোমাদের পেছনে তোমাদের মা-বাবা, ভাই-বোন এবং শিক্ষকসহ সবারই অবদান আছে। আমরা যখন কিছু অর্জন করি, তখন যেন পেছনের অর্জনকে গুরুত্ব দেই। আমরা যে এখানে দাঁড়িয়ে আছি, তার পেছনে বহু মানুষের অবদান আছে।
অনুষ্ঠানে উপ-উপাচার্য (প্রশাসক) অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন বলেন, আজকাল আমাদের বাচ্চারা সকাল সকাল ঘুমাতে চায় না। মোবাইল দেখতে চায়। কবি নজরুলের ভাষায়, আমরা ভোর বেলার পাখি হতে পারিনি। কারণ আমরা রাতে দেরিতে ঘুমাই। মোবাইল একটা জাতীয় রোগ। এ রোগে শুধু শিশুরাই না, বরং ছোট থেকে বড় সবাই আক্রান্ত। এটা আমাদের উপকারী, কিন্তু আমাদের অনেক সময় নষ্ট করে। আমরা সব সময় মোবাইল কম ব্যবহারের চেষ্টা করব।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ছাত্র উপদেষ্টা ড. আমিরুল ইসলাম, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন মজুমদার, আইসিটি সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. ছাইফুল ইসলামসহ অর্ধ-শতাধিক শিশু ও তাদের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ফুলকুঁড়ি আসর বাংলাদেশের একটি জাতীয় শিশু সংগঠন। এটি স্কুলের ছেলেদের বহুমুখী দক্ষতাসহ নৈতিক চরিত্র ও সুঠাম শারীরিক গঠন নিয়ে কাজ করে। সংগঠনটি ১৯৭৪ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭৯ সালে এটি সমাজকল্যাণ অধিদপ্তর থেকে জাতীয় শিশু সংগঠন হিসেবে রেজিস্ট্রেশন লাভ করে।