
চ্যাম্পিয়নস লিগে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে হারের যন্ত্রণা এখনো পুরোপুরি কাটেনি বার্সেলোনার। কিন্তু লা লিগার শিরোপা যেন চোখের সামনেই দাঁড়িয়ে। তাই হতাশায় ডুবে থাকার সুযোগ নেই তাদের। রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে এল ক্লাসিকোয় নেমেই যেন বদলে গেল বার্সা। মাত্র ১৪ মিনিটে দুই গোলে পিছিয়ে পড়লেও দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে জয় ছিনিয়ে নিল তারা। উত্তেজনায় ভরপুর ম্যাচে জিতে হান্সি ফ্লিকের দল একধাপ এগিয়ে গেল শিরোপার পথে।
এই মৌসুমে চারবার রিয়ালের মুখোমুখি হয়ে চারবারই জিতেছে বার্সেলোনা—স্প্যানিশ সুপার কাপ, লা লিগা ও কোপা দেল রের ফাইনাল মিলিয়ে প্রতিবারই জয়ের হাসি হেসেছে তারা। সর্বশেষ ম্যাচে অলিম্পিক স্টেডিয়ামে রিয়ালকে ৪-৩ গোলে হারিয়েছে তারা।
ম্যাচের শুরু থেকেই উত্তেজনার আভাস মিলছিল। চতুর্থ মিনিটেই কিলিয়ান এমবাপ্পেকে বক্সে ফাউল করে রিয়ালকে পেনাল্টির সুযোগ দেন বার্সার গোলরক্ষক ভয়চেক সেজনি। স্পট কিক থেকে গোল করে রিয়ালকে এগিয়ে দেন এমবাপ্পে। এরপর ১৪ মিনিটে আবারও গোল করেন এই ফরাসি ফরোয়ার্ড, এবার ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের পাস থেকে। এই গোলের মাধ্যমে তিনি ভেঙেছেন ৩২ বছরের পুরোনো এক রেকর্ড।
মৌসুমের শুরুটা ধীরগতির হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন এমবাপ্পে। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে তিনি এখন পর্যন্ত করেছেন ৩৮ গোল—রিয়ালে প্রথম মৌসুমে যা সর্বোচ্চ।
বার্সেলোনা অবশ্য দারুণভাবে ফিরে আসে ম্যাচে। ১৯ মিনিটে ফেরান তোরেসের ক্রসে হেডে গোল করেন এরিক গার্সিয়া। এরপর ৩২ মিনিটে ইয়ামাল ম্যাচে সমতা ফেরান দারুণ এক বাঁকানো শটে। ৩৪ মিনিটে পেদ্রির পাস থেকে রাফিনিয়া গোল করে বার্সাকে এগিয়ে দেন। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগেই আবারও গোল করেন রাফিনিয়া। যদিও মাঝখানে একবার রিয়াল পেনাল্টি পেলেও অফসাইডের কারণে বাতিল হয়ে যায় সেটি। এই প্রথম ৮২ বছরের এল ক্লাসিকোর ইতিহাসে প্রথমার্ধে দেখা গেল ছয়টি গোল।
দ্বিতীয়ার্ধে উত্তেজনা কিছুটা কম থাকলেও গোলের খরা কাটেনি। ৭০ মিনিটে ভিনিসিয়ুসের পাস থেকে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন এমবাপ্পে। বার্সার বিপক্ষে লা লিগায় ৩০ বছর পর কোনো রিয়াল খেলোয়াড় হ্যাটট্রিক করলেন।
শেষ দিকে দুই দলই গোল করলেও দুটিই বাতিল হয় অফসাইডের কারণে—একটি এমবাপ্পের, অন্যটি ফার্মিন লোপেজের। শেষ পর্যন্ত ৪-৩ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বার্সা। ৩৫ ম্যাচ শেষে তাদের সংগ্রহ ৮২ পয়েন্ট। ৭ পয়েন্ট পেছনে থেকে দ্বিতীয় স্থানে রিয়াল। লিগে বাকি মাত্র তিন ম্যাচ। নাটকীয় কিছু না ঘটলে এবারের শিরোপা বার্সেলোনার ঘরেই উঠবে।