পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) -এর বিতর্কিত কর্মকর্তা রাসেলের চাকুরিচ্যুত না হওয়া পর্যন্ত পবিপ্রবিতে অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত ক্লাস পরীক্ষা স্থগিত থাকবে।
শনিবার(১৭ই ফেব্রুয়ারি) রাত ৯ টায় পবিপ্রবির বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জন্য নির্ধারিত কৃষিকুঞ্জের ডাইনিং কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পিওটু প্রোভিসি মো: সামসুল হক ওরফে রাসেল কতৃক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মোঃ নজরুল ইসলাম শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত এবং হুমকির শিকার হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নিকট লিখিত অভিযোগে সহকারী অধ্যাপক মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত রাসেল শনিবার ডাইনিং এ আমাকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ। করে এবং উপস্থিত অন্য শিক্ষকদের সামনেই আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে এবং পরবর্তীতে আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে এই বলে যে, তোকে যেখানে পাবো সেখানেই মারবো।সে আমাকে জীবননাশের হুমকিও দেয় এবং বলে, “তোর পেছনে কে আছে দেখে নেবো, তুই যা, দেখি তোর মাইর কে বাঁচায়। এছাড়াও অভিযুক্ত রাসেল উপস্থিত শিক্ষকদের উপেক্ষা করে মোঃ নজরুল ইসলামকে আঘাত করেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।
ঘটনার বিষয়ে অভিযুক্ত সামসুল হক ওরফে রাসেল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক শেখ তানজিলা দোলার সাথে মোঃ নজরুল ইসলামের বিভাগীয় বিষয়ে মতানৈক্য সৃষ্টি হয়। দোলা আমার আত্মীয় হওয়ায় আমি নজরুলকে তাঁর সাথে কোনো ঝামেলা না করার জন্য অনুরোধ করি। পরবর্তীতে এই বিষয়ে তাঁর সাথে কথা কাটাকাটির সৃষ্টি হয়। তবে অভিযুক্ত রাসেল মারামারির বিষয়টি অস্বীকার করেন।
উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে আজ রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারী) পবিপ্রবি প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেন। এ মানববন্ধনে পবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি একনিষ্ঠভাবে অংশগ্রহণ করে এবং বিতর্কিত কর্মকর্তা রাসেল চাকরিচ্যুত না করা পর্যন্ত অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত করেন।
এ মানববন্ধনে উপস্থিত পবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ জেহাদ পারবেজ বলেন, “শিক্ষকদের উপর হামলা কোনো সভ্য সমাজ এটা মেনে নিতে পারে না। আমরা শিক্ষক হিসেবেও এটা মেনে নিতে পারিনি। পবিপ্রবি কর্মকর্তা রাসেল নিয়োগের পূর্বেও বহু বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত ছিল এবং নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার পরেই এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি করেন। এর সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এ মানববন্ধন চলমান থাকবে।"
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান মিয়া বলেন, পবিপ্রবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থ, শিক্ষকদের স্বার্থ এবং শিক্ষার্থীদের যে স্বার্থ এর উপরে কোনো সার্থ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার এবং গবেষণার পরিবেশ বজায় রাখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি বদ্ধপরিকর এবং তারই ধারাবাহিকতায় আজকে আমাদের সম্মানিত একজন কলিগকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা লাঞ্ছিত করেন এবং হত্যার হুমকি দেন। উক্ত কর্মকর্তাকে চূড়ান্তভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরিচ্যুত না করা পর্যন্ত আমাদের এ আন্দোলন চলবে।