ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) বৈশাখী মঞ্চ তৈরির নামে ২৪ বছর পুরোনো তিনটি গাছ কেটেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইবি সংসদ ছাত্র ইউনিয়ন, সামাজিক ও পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্য এবং ডীপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক কনসার্ভেশন ফাউন্ডেশন তীব্র প্রতিবাদ ও মানববন্ধন করেছে।
সোমবার (৪ মার্চ) সকাল থেকে এ সংগঠনগুলো মানববন্ধন করে। এসময় সংগঠনের সদস্যদের প্রতিবাদী লিখা সংবলিত যেমন 'গাছ কেটে উন্নয়ন চাই না', 'নির্বিচারে গাছ কাটা বন্ধ হোক', 'সৌন্দর্য বর্ধনের নামে বৃক্ষ নিধন বন্ধ হোক', 'গাছ লাগাও জীবন বাঁচাও, জীবন জ্যোতি সৃষ্টি টেকাও', 'লক্ষ গাছ লক্ষ প্রাণ', 'বাঁচাও প্রকৃতি বাঁচাও প্রাণ ' সহ নানা প্ল্যাকার্ড হাতে দেখা যায়।
এসময় ডীপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক কনসার্ভেশন ফাউন্ডেশনের দল নেতা আরাবী আঁখি বলেন, গাছ আমাদের পরম বন্ধু, আমাদের ছায়া এবং অক্সিজেন দিয়ে আগলে রাখে। একটা গাছ বড় হতে বছরের পর বছর সময় লাগে। আমাদের এই তিনটি গাছের বয়স প্রায় ২৪ বছর। উন্নয়নের নামে এই গাছ কেটেছে আমাদের প্রশাসন। তবে তা কতটা উন্নয়ন বয়ে আনছে? আমাদের সকলের পক্ষ থেকে দাবী থাকবে যেনো এই গাছ কাটা বন্ধ করা হয়। আমরা এই পরিবেশ নষ্ট করতে যে গাছ কাটছে তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সচেতন মহলের প্রতি আহবান থাকবে যেনো আমাদের সাথে এগিয়ে আসে এবং প্রশাসন যেনো এই সমস্যার দ্রুত সমাধান করে।
পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্যের সভাপতি ইসতিয়াক ফেরদৌস ইমন বলেন, এ গাছগুলো আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে দুই যুগ ধরে দেখে আসছে। আমরা অভয়ারণ্য এ ক্যাম্পাসে প্রায় সাতশোরো অধিক গাছ লাগিয়েছি। তাই আজকে আমরা এই প্রতিকী চিত্রাঙ্কন প্রতিবাদ করছি। এখানে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের মতামত গ্রহণ করে চিত্রাঙ্কনের মাধ্যমে তুলে ধরছি। প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্ত আমাদের মর্মাহত করেছে। আমরা এ বিষয়ের তীব্র নিন্দা জানাই।
ইবি সংসদ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্ত কখনো ক্যাম্পাসের উন্নয়নে আসতে পারে না। এখানে দুইটি একাডেমিক ভবনের মাঝে মঞ্চ বানানোর কোনো মানে হয় না। আমরা আশাকরি প্রশাসন আমাদের কথাগুলো শুনে এর একটি সুষ্ঠু সমাধান দিবে।
এ বিষয়ে প্রধান প্রকৌলশী (ভারপ্রাপ্ত) কে এম শরীফ উদ্দীন বলেন, ওই জায়গায় মঞ্চ করলে গাছ কাটা ছাড়া উপায় ছিল না। ভিসি, প্রো ভিসি, ট্রেজারার, ডিন, শিক্ষক সমিতির সভাপতিসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলেই গাছ কাটা হয়েছে। কোনো কাজের প্রয়োজন হলে গাছ কাটা লাগে। এখানে গাছ থাকলেও মঞ্চ করলে শিকড়ের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
জানতে চাইলে, উপাচার্য ছুটিতে থাকায় তাঁর দায়িত্বে থাকা কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোঃ আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া বলেন, এখানে দুইটা গাছ মারা গেছিলো অলরেডি। এখানে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রোগ্রাম হয় তো এখানে ডালপালা পড়ে আঘাতের সম্ভাবনা থাকে। আর আমরা এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃহৎ স্বার্থে ডিন, শিক্ষক সমিতিসহ সবার সাথে কথা বলে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রগতিশীলতার চর্চা বজায় থাকুক এবং আমরা মঞ্চ তৈরির সাথে সাথে আরো ৫০০ বৃক্ষ রোপণ করে দিবো।