রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ৯ শিক্ষার্থীকে নানা মেয়াদে শাস্তি দিয়েছে প্রশাসন। রোববার (২২ অক্টোবর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫২৫তম সিন্ডিকেটে সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে নির্যাতনের সত্যতা প্রমাণ পাওয়ার পরও দুই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
সভায় সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য গোলাম সাব্বির সাত্তার। নাম না প্রকাশ শর্তে এই তথ্য নিশ্চিত করেন সিন্ডিকেট একাধিক সদস্য।
সিন্ডিকেট সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মোট ১১ শিক্ষার্থীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য সভায় প্রস্তাব ওঠে। ১১ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৪ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতা। শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১ জনকে স্থায়ী ও বাকি ৮ জনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। ছাত্রলীগের ৪ নেতার মধ্যে ২ জনকে শাস্তি দেওয়া হলেও অন্য ২ নেতাকে সতর্ক ও হল থেকে সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন অভিযোগে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে হল থেকে বহিষ্কার ও সতর্ক করা হয়েছে।
সিন্ডিকেট সদস্যরা জানিয়েছেন, শৃঙ্খলা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আশিকুল্লাহকে। ২০২২ সালের জুনে আইন বিভাগের এক শিক্ষকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগে তাকে ওই সময় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছিল। এ ছাড়া ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি জালিয়াতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে ইয়াসির আরাফাত, নজরুল, মাহিন, শাফিউল্লাহ, আলিফ ও শিশিরকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মামলাও চলমান থাকবে। তাদের বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এ বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী কৃষ্ণ রায়কে মারধর ও ‘শিবির’ আখ্যা দিয়ে হত্যার হুমকির অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা নাঈম ও সোলাইমানকে সাময়িক বহিষ্কারের সুপারিশ করেছিল শৃঙ্খলা কমিটি। সেই সঙ্গে অনাবাসিক শিক্ষার্থী হওয়ায় তাদের দ্রুত হল থেকে অপসারণ করতে বলা হয়। কিন্তু সিন্ডিকেট সভায় সাময়িক বহিষ্কারের সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হয়নি। তাদের শুধু হল থেকে অপসারণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গত বছর ১২ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তঃবিভাগ ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্স বিভাগের এক শিক্ষককে লাঞ্ছিতের ঘটনায় আইবিএ ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সিনহাকে এক বছরের জন্য বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়। এ ছাড়া ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত হাসিবুল ইসলামকে সাময়িক বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়। গতকাল রাতের সিন্ডিকেট সভায় শৃঙ্খলা কমিটি তাদের দুজনের বিষয়ে যে সুপারিশ করেছিল, তা বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে এক সিন্ডিকেট সদস্য বলেন, সিন্ডিকেট সভায় ১১ শিক্ষার্থীর শাস্তির বিষয়ে কথা হয়েছে। এটা শৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তবে দুই শিক্ষার্থীর শাস্তি শৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্ত হয়নি। তাদের শাস্তি কমিয়ে শুধু সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।