রাবিতে মারধরের ঘটনায় ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতদের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক আরব হোসেনকে মারধরের ঘটনায় ছাত্রলীগের নয় জন নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাত ৩০ থেকে ৪০ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়েছে। আরব হোসেন নিজেই বাদী হয়ে এ মামলার আবেদন করেছেন।

মামলায় তার ওপর হামলা, মারধর, হত্যাচেষ্টা, স্বর্ণালংকার ছিনতাই এবং মোবাইল ফোন ও মোটরসাইকেল ভাঙচুরের অভিযোগ আনেন তিনি। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নগরীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমীন।

মামলার আবেদনে করা ৯ বিবাদী হলেন রাবি ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি কাজী আমিনুল হক লিংকন, বর্তমান সহ-সভাপতি শাহীনুল ইসলাম সরকার ডন ও তাওহীদুল ইসলাম দুর্জয়, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মোর্শেদ ও শামীম হোসেন, শাহ মখদুম হল শাখা ছাত্রলীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক মো. তানজিল হোসেন, আরবি বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাজু আহমেদ, ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শামিম মাহবুব সজীব এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মইনুল ইসলাম তপু। শেষ তিনজন ছাত্রলীগের কর্মী বলে পরিচিত।

মামলার এজাহারে আরব হোসেন জানিয়েছেন, গত ২১ অক্টোবর রাবির পরিবহন মার্কেটে শিমুল কম্পিউটার দোকানের সামনের রাস্তায় ডনের নির্দেশে বিবাদীগণ দলবদ্ধ হয়ে তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এক পর্যায়ে কাজী লিংকন জিআই পাইপ দ্বারা হত্যার উদ্দেশে তার মাথায় আঘাত করলে তিনি পড়ে যান। তখন অজ্ঞাত কয়েকজন তার ডান চোয়ালে আঘাত করে জখম করে। তাওহীদ দুর্জয় লোহার রড দিয়ে তার মাথার পিছে আঘাত করে।

এরপর তানজিল হোসেন তার গলায় থাকা আনুমানিক ২৫ হাজার মূল্যের স্বর্ণের চেইন কৌশলে নিয়ে নেয়। রাজু আহমেদ জিআই পাইপ দ্বারা তার কোমরে আঘাত করলে পকেটে থাকা মোবাইলের ডিসপ্লে ভেঙে যায়। লিংকন, ডন, শামিম ও সজিবসহ অজ্ঞাত বিবাদীরা তাদের হাতে থাকা জিআই পাইপ এবং লোহার রড দিয়ে তার জিক্সার এসএফ লাল রংয়ের মোটরসাইকেল ভেঙে ফেলে। এ সময় আশপাশের লোকজন ও সংবাদকর্মীরা এগিয়ে গেলে বিবাদীরা তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।

মামলার আবেদনের বিষয়ে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রুহুল আমীন বলেন, আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে আরব হোসেন একটি মামলার আবেদন দিয়ে গেছে। আমরা যাচাই-বাছাই করে মামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।

উল্লেখ্য, সদ্য ঘোষিত রাবি শাখা ছাত্রলীগের কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে গত ২২ অক্টোবর কাজী লিংকন, সরকার ডন, দুর্জয়, নিয়াজ মোর্শেদসহ কাঙ্ক্ষিত পদবঞ্চিতরা অবস্থান কর্মসূচি করেন। এদিন দুপুর ১২টার দিকে সাবেক সহ-সম্পাদক আরব হোসেন মোটরসাইকেলে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে আসেন। এ সময় তার ওপর চড়াও হয় তারা। একপর্যায়ে তাকে গণমাধ্যমের সামনেই মারধর ও ধাওয়া করা হয়। মারধর ও ধাওয়া করার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।