দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ধনী-গরিবের বৈষম্য নিয়ে রাবিতে নাটক


RU Correspondent | Published: 2023-11-18 13:10:17 BdST | Updated: 2024-05-03 08:54:38 BdST

দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতিতে ধনী-গরিবের মধ্যে বৈষম্য, জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত, ব্যবসায় সিন্ডিকেট ও অবৈধভাবে দেশের সম্পদ বিদেশে পাচারসহ বিভিন্ন প্রতিবাদী পর্ব নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) অনুষ্ঠিত হয়েছে মুক্ত নাটক ‘অদ্ভুত এই সময়’।

শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার মুক্ত মঞ্চে বেদুইন হায়দার লিও’র রচনায় ও আব্দুল মজিদ অন্তরের নির্দেশনায় এ নাটকটি পরিবেশনা করা হয়। নাটকটির পরিবেশনায় ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক সংগঠন 'তীর্থক'।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, একদল নাট্যকর্মী গানের সুরে ও অভিনয়ের মাধ্যমে দেশের দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ফলে জনজীবনে যে প্রভাব পড়ছে তা তুলে ধরেছেন। মূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে ধনী-গরিবের যে বৈষম্য সৃষ্টি হচ্ছে তাও তুলে ধরা হয়েছে এ নাটকে। হরতাল ও অবরোধের ফলে জনগণের দুর্দশা, বাজার সিন্ডিকেট, দেশের উন্নয়ন ও ভোটের অধিকারের জন্য জনগণের জীবন দিতে হয় এমন চিত্রও নাটকে তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি বিদেশিদের দালাল হয়ে দেশের ক্ষমতায় আসার প্রতিযোগিতা, ঋণ দেওয়ার শর্তে আইএমএফ ও বিশ্ব ব্যাংক দেশ ক্রয় করার সাহস দেখানোসহ বিভিন্ন প্রতিবাদী চরিত্র এ নাটকে ফুটিয়ে তুলেছেন তারা।

একটি ছোট গানের মাধ্যমে বর্তমান সমাজের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন এ নাটকের অভিনয়শিল্পীরা। গানটিতে তারা বলেন, ‘বৈষম্যের এ দেশে, গরীব মানুষ কান্দেরে ধনী সমাজ হাসে তাও নাকি দেশ এখন উন্নয়নে ভাসেরে উন্নয়নে ভাসে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি কমিশন আর চাঁদাবাজি মরছে কারা মারছে কারা করছে কারা কারসাজি, ভোট চাইতে যুদ্ধ করে অধিকার মেলে লাশেরে, অধিকার মেলে লাশে তাও নাকি দেশ এখন উন্নয়নে ভাসেরে উন্নয়নে ভাসে।

নাটক দেখা শেষে অভিব্যক্তি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম কনক বলেন, নাটকটিতে বাস্তবতার আলোকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। দেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতির ফলে সাধারণ মানুষের ওপর এর যে প্রভাব পড়ছে তাও বিভিন্ন আঙ্গিকে তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবিক পক্ষে আমরা এগুলো দেখতে চাইনি। সুনিপুণ অভিনয়ের মাধ্যমে দেশের অবস্থা তুলে ধরার জন্য তীর্থক সংগঠনকে ধন্যবাদ।

এ বিষয়ে নাটকের নির্দেশনায় থাকা আব্দুল মজিদ অন্তর বলেন, রাবিতে একসময় সাংস্কৃতিক চর্চার উর্বর ভূমি ছিল। নাটক, গান ও কবিতার মাধ্যমে সমাজের নানা অসঙ্গতি তুলে ধরা হতো। শোষণের বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিবাদের মাধ্যম ছিল এ সমস্ত সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড। সাংস্কৃতিক কর্মীরা সর্বদা শোষিত, বঞ্চিত ও নিপীড়িত মানুষের পক্ষে কথা বলতেন। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে সেই চর্চা অনেকটাই বিলুপ্তির পথে। এ সঙ্কট মোকাবেলায় দুয়েকটা সংগঠন এখনও সাংস্কৃতিক চর্চা অব্যাহত রেখেছে।

এসময় নাট্যকলা বিভাগের অধ্যাপক আতাউর রহমান রাজুসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।