রাবিতে মধ্যরাতে শিক্ষার্থী ও সাংবাদিককে মারধর ‘নেশাগ্রস্ত’ ছাত্রলীগের


RU Correspondent | Published: 2023-11-27 19:22:52 BdST | Updated: 2024-05-03 00:46:14 BdST

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হলে উচ্চশব্দে গানবাজনা চলাকালে নিষেধ করায় আবাসিক শিক্ষার্থীদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এসময় এক সাংবাদিককেও মারধর করেন তারা।

শনিবার (২৫ নভেম্বর) দিনগত মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হবিবুর রহমান হলে দ্বিতীয় ব্লকে ২১৬ নম্বর কক্ষের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় সোমবার (২৭ নভেম্বর) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক রায়হান ইসলাম। তিনি দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী ও দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা হলেন আল-আমিন আকাশ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিউটের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী এবং একই হলের ২১০ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী। তিনি হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি দায়িত্বে আছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দিনগত রাত দেড়টার দিকে শহীদ হবিবুর রহমান হলের ২১৬ নম্বর কক্ষে বিকট আওয়াজে গানবাজনা ও হইচই করা হচ্ছিল। তখন শব্দ সহ্য করতে না পেরে ৩১৫ নম্বর কক্ষ থেকে আবাসিক শিক্ষার্থী শাহাদত হোসেন আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মঞ্জুরুল ইসলামকে নিয়ে নিচতলায় আসেন। তখন ২১৬ নম্বর রুম থেকে হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি আকাশকে দেখে গান কোথায় বাজে তা জিজ্ঞাসা করেন। এ কথা জিজ্ঞাসা করতেই উভয়ের ওপর চড়াও হন এবং তুইতোকারি শুরু করেন আকাশ। তখন উভয়ের মধ্যে তর্কাতর্কি চলে।

এসময় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ২১৬ নম্বর কক্ষ থেকে বের হন ইমরান ও সম্রাট। তর্কের একপর্যায়ে শাহাদতের কানে সজোরে থাপ্পড় দেন ইমরান। তখন পাশের কক্ষের (২১৭ নম্বর) রায়হান ইসলাম ঘটনাস্থলে যান সংবাদ সংগ্রহের কাজে। এসময় তাকেও ধাক্কা দেন ইমরান ও সম্রাট। একপর্যায়ে টি-শার্ট পরতে ২১০ নম্বর কক্ষের দিকে গিয়ে সহযোগীদের ডাকেন আকাশ। তখন ২০৮ নম্বর কক্ষের নাজিম ও আমির হামজাসহ কয়েকজন মিলে অতর্কিতভাবে রায়হানকে মারধর করেন। এতে তিনি মাথায় ও চোখে আঘাত পান।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা আল-আমিন আকাশ বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে এবং আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ হিল গালিব বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। দায়িত্বরত সাংবাদিকদের গায়ে হাত দেওয়া কোনোভাবেই কাম্য নয়। অভিযুক্তের বিষয়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শরিফুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কাল (বৃহস্পতিবার) সবাইকে ডেকে ঘটনার বিবরণ শুনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।