১০ শিক্ষার্থীর জন্য পাঁচ শিক্ষক!


টাইমস অনলাইনঃ | Published: 2018-09-01 05:21:19 BdST | Updated: 2025-03-17 08:06:06 BdST

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শিক্ষকের অনুপাতে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী বাংলাদেশে।বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) তথ্য মতে, বাংলাদেশের শিক্ষায় প্রতি একজন শিক্ষকের বিপরীতে শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩৫ জন; যেখানে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভারতের অনুপাত ৩১, নেপালে ২৯, পাকিস্তানে ১৯ ও শ্রীলংকায় ১৭।

ব্যানবেইসের এ তথ্য মাধ্যমিক স্তর নিয়ে সাজানো হলেও দেশের প্রাথমিক শিক্ষার অবস্থা যে একেবারেই এর বিপরীত দাঁড়িয়ে; ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ই সেক্ষেত্রে বড় উদাহরণ। সম্প্রতি খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাত্র ১০ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে ৫জন শিক্ষক পাঠদান করছেন এই বিদ্যালয়টিতে। দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থা চলে আসলেও এ নিয়ে মাথাব্যাথা নেই স্থানীয় ব্যক্তি ও প্রশাসনের। উদ্যোগ নেই গ্রাম্য শিশুদের স্কুলে নিয়ে আসারও।

বিজ্ঞাপন

যদিও উপজেলা শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলাম বলছেন, ‘কমিউনিটি স্কুল থেকে জাতীয়করণ হয়ে বিদ্যালয়টি সরকারি হয়েছে। ওই এলাকায় জনবসতি কম হওয়ায় বর্তমানে শিক্ষার্থীও কম। আশা করছি শিক্ষার্থী বাড়বে।’

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মনজুর মোরশেদ জানান, বিদ্যালয়টির প্রথম শ্রেণীতে ২ জন ছাত্রী, দ্বিতীয় শ্রেণীতে ১ জন ছাত্র ও ৩ জন ছাত্রী, তৃতীয় শ্রেণীতে ১ জন ছাত্র, চতুর্থ শ্রেণীতে ১ জন ছাত্রী, পঞ্চম শ্রেণীতে ২ জন ছাত্র ও ২ জন ছাত্রী মিলে ১২ জন শিক্ষার্থী অধ্যায়ন করছে। এদের মধ্যে ২য় শ্রেনীর এক ছাত্রী অভিভাবকসহ ঢাকায় গিয়ে অবস্থান করছেন এবং সেখানে স্কুলে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়াও ৫ম শ্রেনীর একজন শিক্ষার্থী কিছুদিন আগে ঢাকা চলে গেছেন বলে জানান প্রধান শিক্ষক।

বিদ্যালয়টির মনিটরিং বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী প্রধান শিক্ষক হিসেবে মনজুর মোরশেদ, সহকারী শিক্ষক হিসেবে আফতারুল ইসলাম, মনোরঞ্জন রায়, ফাইজার রহমান, আজমেরী আক্তার নামে মোট ৫ জন শিক্ষক কর্মরত আছেন। ২০১২ সালে এই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হয়।

সম্প্রতি বিদ্যালয়টিতে সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিদ্যালয়টিতে মোট ১০ জন শিক্ষার্থী থাকলেও এইসব শিক্ষার্থীর অনেকেই নিয়মিত স্কুলে আসে না। আসলেও গল্প-আড্ডা করে স্কুল সময় কাটিয়ে দেন। অথচ সরকার তাদের জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করছেন।

বিজ্ঞাপন

সহকারি শিক্ষক ফাইজার রহমান বলেন, ‘চন্দ্রা গ্রামে জনবসতি কম হওয়ায় এই গ্রামে শিক্ষার্থী পাওয়া যায় না। বর্তমানে ১০ শিক্ষার্থীকেই আমরা যত্ন সহকারে পড়াচ্ছি। শিক্ষার্থীরা নিয়মিত স্কুলে আসে।’

প্রায় একই রকম কথা জানিয়ে প্রধান শিক্ষক মনজুর মোরশেদ বলেন,‘শিক্ষার্থী বৃদ্ধির জন্য আমরা আশে-পাশের গ্রামের মানুষদের সাথে কথা বলছি। পাশের গ্রামগুলোর কিছু শিক্ষার্থী আমরা পাব। আগামী বছরে আরও কিছু শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়বে।’ তবে আড্ডা দিয়ে সময় পার করার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।