বেসরকারি স্কুলে লটারিতে ভর্তির প্রস্তাব


টাইমস প্রতিবেদক | Published: 2020-11-16 02:41:44 BdST | Updated: 2024-04-19 22:10:58 BdST

বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হতে পারে। করোনা পরিস্থিতির কারণে ইতোমধ্যে সব ক্লাসের ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের প্রস্তাব দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)।

ভর্তি পরীক্ষার পরিবর্তে প্রতিটি শ্রেণিতেই শূন্য আসনের বিপরীতে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী বাছাই এবং লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তির প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

সম্প্রতি মাউশি থেকে পাঠানো প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ২০২১ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লটারির মাধ্যমে ভর্তি করা যেতে পারে। ক্লাস অনুযায়ী নয়টি ধাপে এ লটারির আয়োজন করতে বলা হয়েছে প্রস্তাবে।

জানা গেছে, নতুন শিক্ষাবর্ষের ভর্তির নীতিমালা চূড়ান্ত করতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, সরকারি ও বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সংশ্লিষ্টদের নিয়ে সভা করা হয়। সেখানে একাধিক প্রস্তাব আসে। এর মধ্য থেকে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি প্রস্তাব সিদ্ধান্তের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন দেয়ার পর মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে ২০২১ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।

বর্তমানে সারাদেশে ৬৮৩টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে শুধু রাজধানীতে আছে ৪২টি। বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে ১৯ হাজার ৪২১টি। এগুলোর মধ্যে ১৬ হাজার ৭৭৫টি এমপিওভুক্ত, বাকি দুই হাজার ৬৪৬টি নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। করোনার কারণে ভর্তি পরীক্ষা বাতিলে মাউশির প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে গৃহীত হলে সারাদেশের এসব বিদ্যালয়ে এ বছর কোনো ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে না।

অন্যদিকে মিশনারি পরিচালিত কোনো কোনো বিদ্যালয় ও কলেজ তাদের নিজস্ব নীতিমালা অনুসরণ করে শিক্ষার্থী ভর্তি করে থাকে। সে সংখ্যা অবশ্য হাতে গোনা। বর্তমানে শুধু প্রথম শ্রেণিতে ভর্তিতে লটারির পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। দ্বিতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হয়। নবম শ্রেণিতে জেএসসি, জেডিসি পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করা হয়। করোনার কারণে এ বছর জেএসসি, জেডিসি, প্রাথমিক সমাপনী ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নেয়া হয়নি। এরই ধারাবাহিকতায় স্কুলগুলোর ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের বিষয়টি আলোচনায় আসে।

মন্ত্রণালয়ে পাঠানো প্রস্তাবে আরও দুটি বিকল্প চিন্তা রাখা হয়েছে। দ্বিতীয় বিকল্প হিসেবে পুরোপুরি স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে পরীক্ষার ভেন্যুর সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। উদাহরণ দিয়ে বলা হয়েছে, রাজধানীর গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুলে প্রতি বছর কম-বেশি দুই হাজার পরীক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়। করোনার বাস্তবতা মাথায় রেখে একটি মাত্র বিদ্যালয়ে দুই হাজার ভর্তিচ্ছুর পরীক্ষা না নিয়ে ৪০০ জন করে অন্তত পাঁচটি ভেন্যুতে এ পরীক্ষা নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে মাউশি।

তৃতীয় বিকল্প হিসেবে অধিদফতর অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। এতে শর্ট কোয়েশ্চেন (ছোট প্রশ্ন) পদ্ধতি বাতিল করে বহুনির্বাচনী প্রশ্ন (এমসিকিউ) চালুরও প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ বাসায় বসে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেবে।

অন্যদিকে, রাজধানীর বেসরকারি বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটি এরই মধ্যে ভর্তি ফরম ছাড়তে শুরু করেছে। বাকিগুলোও ভর্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে।