ঘোষণা দিয়ে একই স্কুলের দুই শিক্ষার্থী ইমন ও নিশাতের আত্মহত্যা!


টাইমস অনলাইনঃ | Published: 2017-10-16 07:02:54 BdST | Updated: 2024-05-20 22:17:26 BdST

নাটোরের সিংড়ায় স্কুলের সহপাঠীদের কাছে ঘোষণা দিয়ে একসঙ্গে আত্মহত্যা করেছে ঘনিষ্ঠ বন্ধু দুই। ইমন হোসেন (১৩) ও নিশাত হোসেন (১৪) নামের ওই দুই কিশোর কীটনাশক ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করে।

রোববার উপজেলার হুলহুলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। দুপুরে ইমন ও নিশাত একসঙ্গে কীটনাশক ট্যাবলেট খায়। পরে অসুস্থ অবস্থায় ইমন সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং নিশাত বগুড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায়।

এর আগে দুই বন্ধু স্কুলে গিয়ে সহপাঠীদের বলে, 'আজ তারা দুজনই সুইসাইড (আত্মহত্যা) করবে। দুজনের শেষ দিন আজ।'

ইমন হোসেন উপজেলার তাজপুর ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের আমিন হোসেন ও নিশাত চৌগ্রাম ইউনিয়নের হুলহুলিয়া গ্রামের মৃত বকুল প্রাংয়ের ছেলে। তারা হুলহুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

পুলিশ ও সহপাঠীরা জানায়, ইমন ও নিশাত রোববার প্রতিদিনের মতো স্কুলে যায়। তবে তারা এদিন স্কুল পোশাক না পড়ে গেঞ্জি পড়ে আসে। ইমন হুলহুরিয়া গ্রামে তার খালার বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করে আসছিল। স্কুলে সহপাঠীদের সঙ্গে কিছু সময় কাটিয়ে আত্মহত্যা করার কথা বলে তারা স্কুল থেকে বের হয়ে যায়।

তারা আরও জানায়, হুলহুলিয়া প্রামাণিক পাড়া এলাকার একটি পুকুর পাড়ে দুজনই কীটনাশক ট্যাবলেট খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যায়। পরে নিশাতকে সেখান থেকে বগুড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুজনেরই মৃত্যু হয়।

স্বজনরা জানায়, ইমনের বাড়ি সিংড়ার তাজপুর ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামে। হুলহুলিয়া গ্রামে খালার বাড়িতে থেকে সে হুলহুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করত। এর আগে সে সিংড়া পৌর শহরের দমদমা পাইলট স্কুল ও কলেজ এবং নিংগইন জোড়মল্লিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়েছে। আর নিশাত হুলহুলিয়া গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা। তারা দুজনই ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং নিয়মিত স্কুলে যেত। তাদের কারো কাছে স্মার্ট ফোন ছিল না। ঠিক কী কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে তা প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি।

হুলহুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী লাইব্রেরিয়ান তৌফিক পরশ সমকালকে বলেন, 'নবম শ্রেণির ছাত্র ইমন ও নিশাতের রোল নম্বর যথাক্রমে ৩০ ও ২৬। সকালে দুজনই স্কুলে আসে। সহপাঠীদের বলে আজ তারা দুজন একসঙ্গে সুইসাইড করবে।'

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল বারিক জানান, ওই দুই শিক্ষার্থী রোববার ১০টা ৪০ মিনিটে স্কুল পোশাক ছাড়া গেঞ্জি পরিহিত অবস্থায় স্কুলে আসে। শ্রেণি শিক্ষক ইয়াকুব আলী তাদের অস্বাভাবিক অবস্থায় ক্লাসে প্রবেশ করতে দেখে প্রধান শিক্ষকের অনুমতি নিতে বলেন। কিন্তু তারা প্রধান শিক্ষকের অনুমতি না নিয়ে স্কুল ত্যাগ করে। কিছুক্ষণ পর তাদের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।

সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তাদের আত্মহত্যার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

 এমএসএল/ ১৬ অক্টোবর ২০১৭