
২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের এসএসসি পরীক্ষা উপলক্ষে দেশের স্কুলগুলোতে চলছে ফরম পূরণ কার্যক্রম। তবে,এ ফরম পূরণের অর্থ আদায়ে দেখা দিয়েছে নৈরাজ্য। শিক্ষা বোর্ড, মন্ত্রণালয় আর আদালতের আদেশ নিষেধ উপেক্ষা করে রাজধানীর বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফরম পূরণে চার থেকে ছয় গুণ বেশি অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সুনির্দিষ্ট প্রমাণের অভাবে এ ধরনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কোনো ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না বলে দাবি বোর্ডের। তবে, নজরদারির অভাবে প্রতি বছরই এ ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে বলে মনে করেন ভুক্তভোগীরা।
বোর্ড নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত অর্থ আদায় না করতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে একাধিকবার সতর্ক করে দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু রাজধানীর বেশিরভাগ স্কুল নানা অজুহাতে ফরম পূরণের নামে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে বোর্ড নির্ধারিত ফির চেয়ে পাঁচ থেকে ছয় গুণ টাকা। দীর্ঘদিনের বিদ্যালয়ের এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে হতাশ শিক্ষার্থীরা।
এক শিক্ষার্থী বলেন, বিজ্ঞান বিভাগের জন্য এক হাজার পাঁচশ টাকা ধরা হয়েছে। তো সেই ক্ষেত্রে আমাদের কাছে যদি ছয় হাজার টাকার কথা বলে তাহলে এই টাকা আমরা দিবো কিভাবে?'
একজন অভিভাবক বলেন, 'এমন নির্দেশনা তো কতই আসে। কিন্তু এটার কি তদারকি হয়?'
অপর একজন বলেন, 'কিছুই তো করার নাই। এখন পরীক্ষার সময়। না দিয়ে তো উপাই নাই।'
তবে নানা অজুহাতে দেখিয়ে আগারগাঁও তালতলা সরকারি কলোনী উচ্চ বিদ্যালয় ও মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ হিমাদ্রী শেখর পাল অতিরিক্ত এ অর্থ আদায়ের যৌক্তিকতা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, 'আপনাদের কাছে বাড়তি মনে হবে কিন্তু আমারা যে পরিশ্রম করেছি, এখানে আমাদের বাড়তি সময় দিতে হচ্ছে। এটা দেখতে হবে তো..। আমাদের যে লম্বা বন্ধ থাকে সেই বন্ধের মধ্যেও আমরা ক্লাস নেই। শিক্ষকরা এবং কমিটি বসে যৌথভাবেই এটা নির্ধারণ করা হয়েছে।'
বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়ে এ ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনে ম্যানেজিং কমিটি বাতিলসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ড।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, 'আমাদের পক্ষে সব জায়গায় যাওয়া সম্ভব হয়না। আমরা মনিটরিং করি না, তা না। প্রামাণ্য কাগজপত্র দিয়ে আমাদের কাছে বলবেন। আমরা অভিযোগকারীর নাম প্রকাশ করবো না এবং অভিযোগ সঠিক হলে কঠোর শাস্তির বিধান আছে, সেটা আমরা প্রতিপালন করবো।'
নির্ধারিত ফি'র অতিরিক্ত অর্থ আদায় না করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া হয়েছে কঠোর নির্দেশনা, আছে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আদেশও। এতসব আদেশ আর নিষেধের বেড়াজাল পেরিয়ে বিদ্যালয়গুলো থেকে প্রতিবছরই নানা অজুহাতে নেয়া হচ্ছে বাড়তি ফি। যার কারণ হিসেবে প্রশাসনের নজরদারীর অভাব এবং অবহেলাকেই দায়ী করছেন ভুক্তভোগীরা।' সূত্র: সময় সংবাদ।
টিআই/ ১১ নভেম্বর ২০১৭