
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি ফরমের ফি বাড়ছে না। ভর্তি ফরমের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব নাকচ করে ২০০ টাকায় বহাল রেখেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভর্তি নীতিমালা সংক্রান্ত কমিটি। আগামী বছরের ভর্তি নীতিমালায় ফরমের দাম বৃদ্ধির সুপারিশ করেছিল মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)।
রোববারের (১২ নভেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ভর্তি নীতিমালা সংক্রান্ত কমিটি বেসরকারি স্কুলে ভর্তি নীতিমালা চূড়ান্ত করে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, দশম শ্রেণিতে ভর্তিইচ্ছু শিক্ষার্থীদের বয়সসীমা বাড়ানো হয়েছে। এটি ১৪ প্লাস থেকে ১৫ প্লাস করা হয়েছে। ২০১৮ শিক্ষাবর্ষের সরকারি-বেসরকারি উভয় ধরনের হাইস্কুলে প্রথম শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে ভর্তির আয়োজন করা হবে। ৬ষ্ঠ ও ৯ম শ্রেণিতে যথাক্রমে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট বা সমমানের পরীক্ষার ফল অনুযায়ী ভর্তি করতে হবে।
অন্যসব ক্লাসে পরীক্ষা নেয়া যাবে। এক্ষেত্রে দ্বিতীয়-তৃতীয় শ্রেণিতে তিনটি বিষয়ে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। চতুর্থ, পঞ্চম, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণিতে তিন বিষয়ে (বাংলা, ইংরেজি, গণিত) ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ভর্তি পরীক্ষায় পাঠ্যপুস্তকের বাইরে থেকে কোনো প্রশ্ন করা যাবে না। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থী যে শ্রেণিতে লেখাপড়া করেছে, সেই ক্লাসের বই থেকে পরবর্তী ক্লাসে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন হবে।
ভর্তিতে আগের মতো মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী, এলাকা, শিক্ষা বিভাগের কোটা থাকবে। পাশাপাশি সরকারি হাইস্কুলের ১০ শতাংশ আসন সরকারি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ থাকবে।
সভার একটি সূত্র জানায়, মাউশির কর্মকর্তারা বেসরকারি হাইস্কুলের ফরমের দামও ২০০ থেকে আরও ৫০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এ নিয়ে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে সংশয় দেখা দেয়। এরপর উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে একজন যুগ্মসচিব সরেজমিন রাজধানীর বিভিন্ন হাইস্কুল পরিদর্শনে যান।
তিনি বলেন, কোনো কোনো স্কুল ২শ’ টাকাও ফরমের দাম নেয় না। এ অবস্থায় প্রশ্ন ওঠে, ওইসব স্কুল ভর্তি পরীক্ষার খরচ কী করে ব্যবস্থা করে? এরপর মন্ত্রণালয় ফরমের দাম না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, তথাকথিত বিখ্যাত স্কুল শুধু বেশি অর্থ নেয়ার ব্যাপারে আগ্রহী। ওইসব স্কুলের দোসর হয়ে মাউশির দু’একজন কর্মকর্তা ফরমের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেন। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত মাউশির ওই সিন্ডিকেটের লক্ষ্য পূরণ হয়নি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্মসচিব (মাধ্যমিক) সালমা জাহান বলেন, ‘মাউশির প্রস্তাবে ফরমের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত থাকলেও তা বাতিল করা হয়েছে। তাই আগের মূল্যই নির্ধারিত থাকছে।’
তিনি বলেন, ‘পরিবর্তন এসেছে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বসয়সীমা ও ভর্তি পরীক্ষায় পাঠ্যপুস্তকের বাইরে প্রশ্ন প্রণয়ন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
অতিরিক্ত সচিব চৌধুরী মুফাদ আহমদ বলেন, ‘আমরা এখন এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বয়স সমন্বয়ের জন্য বোর্ডগুলো নির্দেশনা পাঠাব।’
এসএম/ ১৩ নভেম্বর ২০১৭