প্রধান শিক্ষক ছাড়াই চলছে গোপালগঞ্জের ২৪৬ প্রাথমিক বিদ্যালয়


টাইমস প্রতিবেদক | Published: 2017-11-25 18:14:34 BdST | Updated: 2024-05-21 03:05:05 BdST

গোপালগঞ্জের পাঁচ উপজেলার ২৪৬ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই। বিদ্যালয়গুলো চলছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে। এ প্রতিষ্ঠানগুলো অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। শিক্ষার মান নেমে যাওয়ার আশংকা করছেন অভিভাবকরা।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানিয়েছে, জেলার পাঁচ উপজেলার ৬৮টি ইউনিয়ন ও ৪ পৌরসভায় মোট ৮৩৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ২৪৬ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ২১৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৭৬টিতে, কোটালীপাড়া উপজেলার ১৮৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২৮টিতে, কাশিয়ানী উপজেলার ১৬৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৬০ টিতে, টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ৭৮টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ২৭টিতে, মুকসুদপুর উপজেলার ১৯৬ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৫৫টিতে প্রধান শিক্ষক নেই।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মাঝিগাতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী আশার মা মারিয়া বেগম, ১ম শ্রেণির শিক্ষার্থী জয়ের বাবা আকরাম সিকদার বলেন, এ স্কুলে প্রধান শিক্ষক নেই। সহকারী শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক করা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়েই স্কুল চলছে। তাকে সার্বক্ষণিক প্রশাসনিক কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। তিনি ক্লাস নিতে পারছেন না। এতে শিক্ষক সংকটে পাঠ দান ব্যাহত হচ্ছে।

মাঝিগাতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক কমল রায় বলেন, বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হচ্ছেন অভিভাবক। এই বিদ্যালয়ে তা নেই। শিক্ষক সংকটে কোমলমতি শিশুরা শিক্ষা বিকাশে পিছিয়ে পড়ছে। শিক্ষক সংকট নিরসন করে তিনি এটি মোচনের দাবি জানান।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার কাজুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রীতা রানী ধর বলেন, বিদ্যালয়ে ৪শ’ ৫৭ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদান করা হচ্ছে। পাঠদানের জন্য প্রধান শিক্ষকসহ ৯টি পদ রয়েছে। প্রধান শিক্ষক না থাকায় ৮ জন শিক্ষক দিয়ে কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

মাঝিগাতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শারমিন আফরোজ সোনিয়া বলেন, এ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক সহ ১১ জন শিক্ষকের পদ রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক ১ জন ও শিশু শ্রেণির ১ জন শিক্ষকের পদশূন্য রয়েছে। এছাড়া ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হোসেনে আরা রুমা মাতৃকালীন ছুটিতে রয়েছেন। একজন শিক্ষক ডেপুটেশনে অন্যত্র কাজ করছেন। ৭ জন শিক্ষক দিয়ে ৪শ’ ১৪ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদান করা হচ্ছে। শিক্ষক সংকটের মধ্যেও আমরা পাঠদান করে যাচ্ছি।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মাসুদ ভূইয়া বলেন, প্রধান শিক্ষক নেই এমন ২৪৬টি বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকই প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। এতে পাঠদান কিছুটা হলেও ব্যাহত হচ্ছে। এটি গুনগত শিক্ষা বিস্তারের অন্তরায়।

তিনি বলেন, আমরা বিদ্যালয় গুলোর তালিকা অধিদফতরে পাঠিয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার সুপারিশ করেছি। খুব শিগগিরই বেশ কিছু বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে অধিদফতর। সূত্র: সমকাল।

আইএইচ/ ২৫ নভেম্বর ২০১৭