
কোন অভিভাবকই সন্তানদের পড়াতে চাননা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে অভিভাবকরা বলেছেন, অর্থের অভাবে বাধ্য হয়েই ছেলে-মেয়েদের সরকারি বিদ্যালয়ে পাঠাচ্ছেন। এমন অবস্থার পিছনে শিক্ষকরা তুলে ধরেন নিজেদের সীমাবদ্ধতার কথা। সরকারি প্রাথমিকের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে শিক্ষাবিদ ড. জাফর ইকবাল বলেন, সরকার দ্রুত প্রাথমিকে নজর না দিলে গোটা শিক্ষা ব্যবস্থাই পিছিয়ে পড়বে।
সিলেট শহরে প্রায় প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা হাজারের বেশি। একেকটি শ্রেণিতে ১শ’ থেকে ২শ’ শিক্ষার্থী। কিন্তু শিক্ষক ১০ জনের কম। সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর জন্য ৫টির বেশি ক্লাসরুমও নেই কোথাও। এই অবস্থায় চলছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান।
ঠিক উল্টো চিত্র বেসরকারি বিদ্যালয়ে। ক্লাসে ২০ থেকে ৩০ জন শিক্ষার্থী। কোথাও একজন আবার কোথাও দু’জন শিক্ষক নিচ্ছেন ক্লাস। অভিভাবকরা বলছেন, অর্থ খরচ হলেও মান-সম্পন্ন শিক্ষার জন্য শিশুদের তারা বেসরকারি বিদ্যালয়ে পড়াচ্ছেন।
মূলত অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠান। এসব বিদ্যালয়ের অভিভাবকরাও সন্তুষ্ট নন পাঠদান নিয়ে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দাবি, মেধাবীরা ভর্তি হয়না তাদের স্কুলে, অভিভাবকরাও অসচেতন। সেই সাথে শিক্ষক ও শ্রেণী কক্ষ সংকটে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে পাঠদান।
পাঠদানের বাইরে প্রাথমিকের শিক্ষকদের দিয়ে বিভিন্ন সরকারি কাজ করানো হয়। এজন্য পড়ানোর মতো পর্যাপ্ত সুযোগ পাচ্ছেনা শিক্ষকরা, মত এই শিক্ষাবিদের। মোহাম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, 'প্রাথমিকে আমরা যদি নজর না দেয় আমরা আরোও ভাল লেখাপড়া আশা করতে পারি না। প্রাথমিক আর মাধ্যমিক একই মন্ত্রণালয়ের আওতায় নিয়ে আসা উচিত।' জাতীয় শিক্ষানীতির সঙ্গে জড়িত এই শিক্ষাবিদ মনে করেন মান সম্পন্ন শিক্ষা দিতে পারছে না সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো।
এসএম/ ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮