
মানসম্মত শিক্ষা আর পর্যাপ্ত সুবিধা না থাকায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে সন্তানদের ভর্তি করাতে চান না বেশিরভাগ অভিভাবক। অর্থের অভাবে যারা এখানে পড়ছে, তারাও বঞ্চিত হচ্ছে মানসম্মত শিক্ষা আর সুস্থ পরিবেশ থেকে। অনেক ক্ষেত্রে ক্লাস করতে হচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে নানা উদ্যোগের কথা বলা হলেও ভিন্ন চিত্র তুলে ধরছেন শিক্ষাবিদরা।
এ যেন অলিখিতিভাবে গরিবের স্কুল। তাই শিক্ষকদের গরজের জায়গাটাও প্রায় শূন্যের কোটায়। এভাবেই চলছে রাজধানীর ছোট বড় প্রায় অর্ধশত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। কোথাও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই চলছে পাঠদান আবার কোথাও শিক্ষার্থীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষাতেও মেলে না শিক্ষকের দেখা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, 'ম্যাডামেরা ভালো পড়ান, কিন্তু মাঝে মাঝেই ক্লাসে আসেন না।'
যাদের কিছুটা সামর্থ্য আছে তারা মানসম্মত শিক্ষা, সুস্থ পরিবেশ অবকাঠামোগত সুযোগের অভাবে সন্তানদের সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে অনীহা দেখান।
অভিভাবকরা বলেন, 'কষ্ট করে হলেও বেশি টাকা দিয়ে বেসরকারি বিদ্যালয়ে সন্তানকে পড়াতে চায়। বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বাচ্চাদের প্রতি আলাদা একটা যত্ন থাকে।'
অভিযোগ অকপটে স্বীকার করলেও এর কারণ হিসেবে নানা সংকটের দোহাই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের।
সীমাবদ্ধতা দূর করে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার দায়িত্ব যাদের তাদের কাছেও উপেক্ষিত সরকারি স্কুলগুলো। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের আন্তরিকতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন শিক্ষাবিদরা।
শিক্ষাবিদ অধ্যাপক শফি আহমেদ বলেন, 'শিক্ষকদের গাফিলতিও ভয়ানকভাবে আছে। দেখার কেউ নেই। সরকারের পদ্ধতি আছে। কিন্তু তা কাজে লাগানো হয় না।'
মন্ত্রণালয় নানা রকম উদ্যোগের কথা বললেও সংকট সমাধানে দিতে পারলেন না কার্যকর কোনো সমাধান।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, 'কিছু সংস্কার দরকার। এছাড়া শিক্ষার্থীরা কোন পরিবেশে পড়ছে তার উন্নয়নে আমরা চেষ্টা করছি।'
শিক্ষাবিদরা বলছেন, প্রাথমিকেই একজন শিক্ষার্থীর বুনিয়াদ তৈরি হয়। এ সময় পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা পেলে অনেক বেশি সুগম হয় তার পথচলা। আর রাষ্ট্রের দায়িত্ব এসব সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
তবে, বাস্তব চিত্র ভিন্ন হওয়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে সন্তানকে ভর্তি করাতে আগ্রহ হারাচ্ছেন অভিভাবকরা। ফলে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সূত্র: সময় সংবাদ।
এসএম/ ১৮ মে ২০১৮