ঢাবির এক ক্যান্টিনেই ছাত্রলীগ নেতাদের বকেয়া ১৮ লাখ টাকা


DU Correspondent | Published: 2024-08-17 09:17:54 BdST | Updated: 2024-09-17 00:50:41 BdST

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) স্যার এ এফ রহমান হলের ক্যান্টিনে ছাত্রলীগ নেতাদের বাকির পরিমাণ ১৭ লাখ ৯৩ হাজার বা প্রায় ১৮ লাখ টাকা বলে দাবি করেছেন হলের ক্যান্টিন মালিক। এর মধ্যে হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ ও সাধারণ সম্পাদক মুনেম শাহরিয়ার মুন দুজনে মিলেই পৌনে ৬ লাখ টাকার মতো বাকি খেয়েছেন।

শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে এই দাবি করেন তিনি। এ সময় তিনি বাকির একটি লিস্ট প্রভোস্ট অফিসে জমা দেন। বাকির এই লিস্ট চ্যানেল টোয়েন্টিফোর-এর ঢাকা হাতে এসেছে।

বাকির হিসেবে দেখা যায়, এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ বাকি খেয়েছেন ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা, সাধারণ সম্পাদক মুনেম শাহরিয়ার মুন খেয়েছেন ২ লাখ ১৬ হাজার টাকা। হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলি হাসান রিফাত ১ লাখ ১৮ হাজার টাকা, কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা আফছার হোসেন রানা ৪৫ হাজার টাকা, জয়-লেখক কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক রবিউল ইসলাম রবি ১ লাখ ১৮ হাজার টাকা, হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জুয়েল ১ লাখ ১৫ হাজার, বাইজিদ কোতোয়াল ৪৫ হাজার টাকা, হল সংসদের সাবেক জিএস রাহিম সরকার ৫৫ হাজার টাকা বাকি করেছেন। তালিকায় ৪৮ জন ছাত্রলীগ নেতা মোট ১৭ লাখ ৯৩ হাজার টাকার বাকি খেয়েছেন।

বাকির বিষয়ে ক্যান্টিন মালিক বাবুল বলেন, ছাত্রলীগের নেতারা দীর্ঘদিন ধরেই বাকিতে খেতেন। তারা নানা সময়ে আমাকে হুমকি ধামকি দিতেন। এমনকি ছাত্রলীগের নেতাদের জন্য প্রতিদিন ১৫-২০ টি খাবার ‘স্পেশাল ভাবে‘ রান্না করা হতো বলে স্বীকার করেছেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, রিয়াজের রুমে প্রতিদিন ৫-১০ টি খাবার যেত। যেহেতু তারা টাকা দিবে না তাই আমি খাতায় লিখেও রাখি নাই। আমি একটি রাউন্ড ফিগার করে হিসাব করেছি। এখন তারা আমাকে পথে বসিয়ে পালিয়েছে। আমি প্রভোস্ট অফিসে এই লিস্ট জমা দিয়েছি। আমি এর বিচার চাই, আমার টাকা ফেরত চাই।

তবে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ক্যান্টিন মালিক বাবুলের বিরুদ্ধেও আছে নানা অভিযোগ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘বাবুলের খাবারের মান খুবই নিম্নমানের। একই সাথে সে সব সময় ছাত্রলীগের নেতাদের তেলবাজি করতেন। অনেক সময়ই তাদের মাধ্যমে নিজের স্বার্থসিদ্ধি করতেন।’

ওই শিক্ষার্থী আরও বলেন, দুপুর দেড়টার পর ক্যান্টিনে উচ্ছিষ্ট ছাড়া কিছুই পাওয়া যেত না। অথচ বাবুল নেতাদের জন্য স্পেশাল খাবার রান্না করতেন।

হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. রফিক শাহরিয়ার বলেন, আমিও বিষয়টি দেখেছি কিছুক্ষণ আগে। আমার কাছে সে অভিযোগ দেয়নি। এর আগেও আমি ক্যান্টিন ঘুরে তার খাবার মান নিয়ে জিজ্ঞেস করেছি। তার কাছে কেউ বাকি খায় কিনা জানতে চেয়েছি। কিন্তু সে বরাবরই আমাকে বলেছে তার কাছে কেউ বাকি খায় না। আমি তাকে নেতাদের নাম দিতে বলেছিলাম, সে দেয়নি।

তিনি বলেন, এত টাকা বাকি খেলে সে কিভাবে ক্যান্টিন পরিচালনা করেছে আমি জানি না। সে আগের প্রভোস্টের কাছে কোন অভিযোগ দিয়েছিল কিনা সেটাও দেখতে হবে। এত টাকক বাকি থাকার পরেও সে কিভাবে ক্যান্টিন চালিয়েছে সেটাও দেখার বিষয়। এটি তদন্তের বিষয়। তদন্ত করে সত্যতা যাচাই করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

এ বিষয়ে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদের ফোন নম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।