ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিষয়ের শিক্ষক তৌহিদুল ইসলামের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে পাঁচদিন ধরে অনশন করছে ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্রী। গত বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) থেকে ওই শিক্ষার্থী বিয়ের দাবিতে অনশন করে যাচ্ছে।
এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে রাণীশংকৈল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অন্যদিকে গত শনিবার (৫ মার্চ) থেকে ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে আন্দোলন করছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজও শহরের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল করে তারা।
এছাড়া সহপাঠীর সঙ্গে যে অন্যায় হয়েছে তার সঠিক বিচার না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়ে ইউএনও বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
অনশনরত ওই শিক্ষার্থী বলছে, ‘কম্পিউটার শিক্ষক তৌহিদুলের সঙ্গে আমার তিন বছরের প্রেমের সম্পর্ক। তিনি বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমার সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করেছেন। এখন তিনি আমাকে এড়িয়ে চলছেন। অন্য জায়গায় বিয়ে ঠিক করেছেন। আমি আমার অধিকার আদায়ের জন্য পাঁচদিন ধরে তৌহিদুলের বাড়িতে অবস্থান করছি। তৌহিদুলের পরিবার আমাকে বাসা থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমাকে বিয়ে না করলে আমি এ বাসা থেকে যাবো না।’
আন্দোলনরত কয়েকজন শিক্ষার্থী বলে, আমাদের সহপাঠীর সঙ্গে যে অন্যায়-অবিচার হয়েছে তার সঠিক বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো। আজ পাঁচদিন হয়ে গেলো, এখনো কোনো সমাধান হয়নি। আমরা চরিত্রহীন শিক্ষকের কঠিন শাস্তি চাই। যাতে তার শাস্তি দেখে আর কোনো শিক্ষক ভুল করেও শিক্ষার্থীদের দিকে কুনজরে না তাকায়। ওই শিক্ষক গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলেও জানায় শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত কম্পিউটার শিক্ষক তৌহিদুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ প্রসঙ্গে কথা বলতে গেলে রাণীশংকৈল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোহেল রানা প্রথমে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে ঘটনা স্বীকার করে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির বলেন, শিক্ষার্থীরা আমাকে একটি স্মারকলিপি দিয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সহকারী পুলিশ সুপার (রাণীশংকৈল সার্কেল) মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, শিক্ষক তৌহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা যে অভিযোগ করেছে তা খতিয়ে দেখা হবে।