ভিডিও গেমসে আসক্তি মানসিক রোগ!


টাইমস প্রতিবেদক | Published: 2018-01-05 05:14:53 BdST | Updated: 2024-05-20 04:59:29 BdST

ভিডিও গেমসে আসক্তিকে প্রথমবারের মতো মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রোগব্যাধির শ্রেণি বিন্যাসের তালিকায় এই আসক্তিকে ‘গেমিং রোগ’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।

খসড়া নথিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, ভিডিও গেমসে আসক্তি একটি আচরণগত সমস্যা। বারবার এই খেলার প্রবণতা দেখা যায় এবং এর থেকে সরে আসা কঠিন বলেও জানা যায়। এছাড়া জীবনের অন্যান্য সব কিছু ছাপিয়ে প্রাধান্য পায় এই গেমিং-এর নেশা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তালিকা সর্বশেষ প্রস্তুত করা হয়েছিল ১৯৯২ সালে। নতুন নির্দেশিকা প্রকাশ করা হবে ২০১৮ সালে। এই নির্দেশিকায় রোগব্যাধির কোড, উপসর্গ, লক্ষণ এগুলো দেওয়া থাকে। চিকিৎসক ও গবেষকরা রোগ নির্ণয় ও রোগের চিকিৎসা পর্যালোচনার জন্য এই নির্দেশিকা ব্যবহার করেন।

এই নির্দেশিকায় বলা হবে, অন্তত ১২ মাস কারো ওপর নজর রেখে পর্যালোচনা করতে হবে ভিডিও গেম খেলার ব্যাপারে সে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে কি না এবং খেলার বিষয়ে তার আচরণ অস্বাভাবিক কি না। কারো ক্ষেত্রে উপসর্গ যদি খুবই বেশি মাত্রায় দেখা যায়, তাহলে ১২ মাসের কম সময়ের মধ্যেই তাকে রোগগ্রস্ত বলে চিহ্নিত করা যাবে।

উপসর্গগুলো কী?

১. ভিডিও গেমস খেলার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণের অভাব (খেলার সময়কাল, ইচ্ছার তীব্রতা, এবং খেলার সংখ্যার বিচারে)।

২. গেমিং-কে যখন কেউ অন্য সব কাজের ওপরে রাখছে।

৩. এর নেতিবাচক প্রভাব সত্ত্বেও যখন কেউ ভিডিও গেমস খেলা ছাড়তে পারছে না বা খেলার তীব্রতা বাড়াচ্ছে।

লন্ডনের নাইটিঙ্গেল হাসপাতালের প্রযুক্তিতে নেশা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ রিচার্ড গ্র্যায়াম এই আসক্তিকে রোগ হিসাবে গণ্য করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন: এর ফলে এ ধরনের আসক্তি মোকাবেলায় বিশেষ চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে গবেষণার সুযোগ তৈরি হবে। এছাড়াও বিষয়টাকে মানুষ গুরুত্বের সঙ্গে নেবে। তবে যেসব ছেলেমেয়ে খেলায় উৎসাহী, অনেক সময় তাদের মা-বাবা তাদের আগ্রহকে আসক্তি বলে ভুল করে বিভ্রান্ত হতে পারেন বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

রিচার্ড গ্র্যায়াম বলেন, প্রতি বছর ৫০ জনের মতো নতুন রোগী দেখি যারা ডিজিটাল নেশার শিকার। এসব ব্যক্তির আচরণ তার জীবনকে কীভাবে প্রভাবিত করছে, তার ঘুম, খাওয়াদাওয়া, সামজিক জীবন এবং শিক্ষা এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কি না, আমি পর্যালোচনা করি।

কোন কোন দেশে ভিডিও গেমস খেলার নেশাকে ইতোমধ্যে বড় ধরনেরম জনস্বাস্থ্যের সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার একটি নতুন আইন করেছে যাতে ১৬ বছরের কমবয়সীদের মধ্যরাত থেকে ভোর ছয়টা পর্যন্ত অনলাইন গেমস খেলার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।

জাপানে যারা খেলে তারা প্রতি মাসে একটা নির্দিষ্ট সময়ের বেশি খেললে তাদের সতর্কবার্তা পাঠানো হয়। চীনে টেনসেন্ট নামে বড় ইন্টারনেট কোম্পানি বাচ্চারা কত ঘন্টা ইন্টারনেটে তাদের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলাগুলো খেলবে তার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ৮ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের মধ্যে গবেষণা চালিয়ে দেখেছে মেয়েদের থেকে ছেলেরা ভিডিও গেমসে সময় কাটায় বেশি।

এইচএম/ ০৪ জানুয়ারি ২০১৮