ইসলামের অপ ব্যাখ্যা সহজ সরল মানুষকে বিভ্রান্ত করছে


Dhaka | Published: 2020-11-15 18:44:50 BdST | Updated: 2024-05-22 03:12:08 BdST

মনেকরুন কেনাকাটা করছেন বাজার থেকে। যে জিনিসটি আপনি এখন কিনবেন সেটি প্রায় সকল দোকানে আছে। এই দোকান গুলোর মধ্য থেকে আপনার সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে আপনি কোন দোকান থেকে আপনার পছন্দের জিনিসটি কিনবেন। সকল দোকানি বিভিন্ন ড্রেস পরা। একজন আছে যার দাঁড়ি রয়েছে, মাথায় টুপি, কপালে স্পষ্ট কালচে নামাজের দাগ, লম্বা লেবাজের ভদ্রলোক। আপনি দেখবেন আপনার অজান্তে আপনি হুজুর লোকটিকে বিশ্বাস করতে চাইবেন। কারন আপনার বিশ্বাস লোকটাকে দেখে জন্মেনি। আপনার বিশ্বাস জন্মেছে ধর্মীয় লেবাজের কারনে। আপনি বিশ্বাস করেন যে এই ধর্মীয় লেবাজে কেউ অন্যায় করতে পারে না। আপনার ধর্মের প্রতি যে শ্রদ্ধাবোধ রয়েছে সেইটুকুন ধর্মীয় অনুভূতি সকল ধর্মীয় লেবাজ পরিহিত মানুষদের থাকে না। যার ফলে দিনশেষে তার দায় নিতে হয় পুরো ধর্মীয় গোষ্ঠীকে। ধর্ম নিয়ে সৃষ্টি হয় বিতর্ক, নানান মত-দ্বিমতের।

কিছুদিন যাবৎ ধর্মীয় স্থানে ধর্ম গুরুর কাছে বলাৎকার ও ধর্ষণের বেশ কিছু ঘটনা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এমনকি এই ধর্মীয় গুরুরা দাবী করে তারা আল্লাহর হুকুম আর মহানবী (স) এর সুন্নাত মোতাবেক চলাফেরা করেন।

প্রশ্ন আসার কথা তাহলে কেন ধর্মীয় উপসনালয়ে ধর্মীয় শিক্ষাদানের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ধর্ষণ ও বলাৎকারে মত ঘটনা কিছু মানুষের দ্বারা কিভাবে সম্ভব ?

এর মূল কারণ হলো কোরয়ান আর সুন্নাত মুখস্থ করা কিন্তু সেই মূল্যবোধ বুকে ধারণ না করা। ইসলাম শিক্ষা দানের আগে তার মূল্যবোধ নিজের ভেতর ধারণ করতে না পারার কারণে একের পর এক ইসলাম বিরোধী কর্মকান্ড ঘটাচ্ছে কিছু শিক্ষিত, উচ্চ শিক্ষিত তথাকথিত ইসলামী পন্ডিত।

এমনটা হওয়ার কারণ গুলোর অন্যতম কারণ হলো কোন মানুষের শিক্ষার শুরুতে তার আগ্রহ বা ইচ্ছের প্রাধান্য না দেওয়া। এমন অনেক পরিবার রয়েছে জন্মের আগেই ঠিক করে আমার বাচ্চাকে আমি হাফেজ বা মাওলানা বানাবো। বাচ্চাটা একটু বড় হলেই তাকে তার ইচ্ছার প্রাধান্য না দিয়ে মাদ্রাসায় পাঠায়। এমন অনেক ঘটনা শুনেছি যে হাফেজি পড়তে গিয়ে শেষ না করে পালিয়ে এসেছে। তাকে আবার জোর করে হাফেজ বানিয়েছে। এখানে পিতা- মাতা তাদের ইচ্ছে পূরণ করতে গিয়ে বাচ্চার ইচ্ছের কথা জানতে চাইলেন না। এই বাচ্চাটা ইসলামী জ্ঞান আহরণ করেছে কিন্তু সেই ইসলামী জ্ঞানের মূল্যবোধ বুকে ধারণ করতে পারেনি। যার ফলে তার দ্বারা যেকোন ইসলাম বিরোধী ঘটনা ঘটতে পারে। যে না বুঝেই শুধু মুখস্ত করে হাফেজ, মাওলানা হচ্ছে সে তার সঠিক প্রতিফলন তার আচরণে প্রকাশ করবে সেটি কি আদৌ সম্ভব ?

একজন মুসলমান হিসেবে বলছি শান্তির ধর্ম ইসলাম মানুষের জন্য শান্তির বার্তা। কিন্তু ইসলামের অপ ব্যাখ্যা এবং অপ চর্চা ইসলামের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে এবং লক্ষ লক্ষ সহজ সরল মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।

একজন মুসলমান হিসেবে ইসলাম শিক্ষা ফরজ একটি কাজ তবে ইসলাম শিক্ষা নিয়েই মাদ্রাসার শিক্ষক বা মাহফিলের শক্তা হতে হলে অবশ্যই ইসলাম শিক্ষার সঠিক মূল্যবোধ বুকে ধারণ করতে হবে। ইসলাম শিক্ষা কতটুকু জানেন সেটি বড় ইবাদত নয়, আপনি জেনে কতটুকু বুকে ধারণ করে তার সঠিক চর্চা করছেন সেটিই হলো মূল ইবাদত এবং মানুষের জন্য কল্যাণকর।

লেখক: আসিফ তালুকদার, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাহিত্য সম্পাদক এবং ডাকসুর সদ্য সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক