শাহিন আব্দুল্লাহঃ অধিভুক্ত সাত কলেজ এখন 'গলার কাঁটা' হয়ে দাঁড়িয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। সাত কলেজের সাথে ঢাবির সমাবর্তনের কোন কাগজপত্রে, সার্টিফিকেটে কোন ধরণের স্পষ্ট ব্যবধান নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাগজপত্রের মতই সাত কলেজের সকল কাগজপত্র। এমনকি বিশ্ব মঞ্চে ঢাবি থেকেও বেশি মুল্যায়ণ পেতে পারেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। কারণ তাদের সাটিফিকেটে বিভিন্ন কলেজের নাম লেখা আছে কিন্তু ঢাবির কাগজে হল লেখা।
দেশের চাকরির ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলো ঢাবি ও সাত কলেজের তফাৎ জানলেও বিশ্ব মঞ্চে তা বুঝানোর কোন উপায় নাই।
এদিকে অনেক শিক্ষার্থী ৭ কলেজে ভালো সাবজেক্ট পেয়েও ঢাবিতে নর্মাল সাবিজেক্টে ভর্তি হন। শুধুমাত্র বেশি মুল্যায়ন ও সম্মানের আশায়। কিন্তু এখন আর তা আলাদা করা যাচ্ছেনা।
সমাবর্তনে যেসব গিফট ও টাই দেয়া হয়েছে তাতেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লেখা ছিল। কোথাও কলেজের নাম ছিলনা।
এসব নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা দাবি করছেন, সাত কলেজের সার্টিফিকেটে যাতে ঢাকা ইউনিভার্সিটির জায়গায় কলেজগুলোর নাম লেখা এবং ঢাবির লোগর জায়গায় কলজের লোগো থাকে এবং কলেজের নামের জায়গায় যাতে 'আন্ডার ঢাকা ইউনিভার্সিটি থাকে' লেখা থাকে। তাহলে অনেকটা পার্থক্য করা যাবে।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে যারা বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স না পান তারাই ৭ কলেজে ভর্তি হয়ে থাকেন বলে জানাইয়েছেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা।
রায়হান নামে এক ঢাবি শিক্ষার্থী বলেন, আমার এক বন্ধু কোন পাবলিকে চান্স পায়নি। কিন্তু সে ৭ কলেজের একটিতে অর্থনীতিতে পড়ে। এখন সেও যদি ঢাবি পরিচয় দেয় । তাহলে আমি কষ্ট করে ঢাবিতে চান্স পেয়ে কি লাভ হলো।
এদিকে সমাবর্তন বক্তা জাতীয় অধ্যাপক তার বক্তব্যে বলেন, শিক্ষা হওয়া উচিত পিরামিডের মত। সবাই উচ্চ শিক্ষা পাবে এমন না। তবে সবাই যাতে প্রাথমিক শিক্ষা পায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
এই বক্তব্যকে মূল ধরে ঢাবির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী জাহিদ আল হসান বলেন, সবাইকেই কেন ঢাবিতে পড়তে হবে।
এদিকে আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী এবং মানুষের কাছে ঢাবি শিক্ষার্থীদের শুনতে হচ্ছে তুমি কি আসল ঢাবি নাকি সাত কলেজ। রেজিস্ট্রার বিল্ডিঙয়ে গেলেও জিজ্ঞাস করা হচ্ছে কোন কলেজ নাকি ঢাবি। এতে বিব্রত হচ্ছে ঢাবি শিক্ষার্থীরা।
এদিকে, শুধু ৭ কলেজ নয় অন্যান্য অধুভুক্ত কলেজগুলর কাগজপত্রেও স্পষ্ট পার্থক্য আনার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
সমস্যা সমাধানে অতিদ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা। এমনকি ফেসবুকে অনেকে লেখালেখি করছেন এসব সমাধান আন্দোলন ব্যতীত সম্ভব নয়। তাই মনে হচ্ছে আন্দোলনের আগেই সমাধানের পথ বের করা উচিত।
লেখকঃ শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়