কতমানুষ যে তার আত্মীয় স্বজনের শেষ বিদায় দিতে পারেনি এই সেতুর জন্য, ফেরীর অপেক্ষায় থাকতে দাফন হয়েছে স্বজনের। মৃত্যু ঘটেছে আবেগের!
কত সন্তানের সামনে তার মা-বাবা চিকিৎসার জন্য ঢাকা পৌঁছানোর আগেই ফেরিঘাটে মৃত্যু ঘটেছে। মৃত্যু ঘটেছে মা-বাবার সামনে সন্তানের। অসহায় আত্মসমর্পণ ছাড়া কিছুই করার ছিলনা!
কত গর্ভধারিণী মা প্রসব যন্ত্রণায় কাতর হয়ে স্বপ্নের মৃত্যু ঘটেছে এই ফেরিঘাটে তার ইয়াত্তা নেই। চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিলনা!
এমন বহু অসহায় আত্মসমর্পণ ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। নিয়মিত এমন হাজারো দুঃখ-দুর্দাশা এবং হৃদয়বিদারক ঘটনার সাক্ষী এই ফেরিঘাট!
পদ্মা বহুমুখী সেতু কেবল দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নয়, পুরো বাংলাদেশের অর্থনীতিই বদলে দেবে!
পদ্মা সেতু শুধু রড, সিমেন্ট ও পাথরের সেতু নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে এই অঞ্চলের মানুষের আবেগ!
জোড়াতালির এই সেতু জোড়া লাগাবে মানুষের স্বপ্নের। তাই অনেকের গাত্রদাহ দিনদিন বেড়েই যাচ্ছে। যত স্বপ্নপূরণের দ্বারপ্রান্তে যাবে পদ্মাসেতু, এদেশের অনেকের গাত্রদাহ তত বৃদ্ধি পাবে!
এই একটি সেতু দেশের ২১টি জেলাকে রাজধানীর সাথে সংযুক্ত করবে। এই ২১ জেলার ৩ কোটি মানুষের ঢাকায় যাতায়াত সহজ হবে। জিডিপি বৃদ্ধি পাবে ১.২ শতাংশ। দক্ষিনাঞ্চলে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে। নতুন কলকারখানা স্থাপনের ফলে নতুন ও টেকসই কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। আঞ্চলিক অবকাঠামোগত উন্নয়ন হবে। পাল্টে যাবে দেশের অর্থনীতি!
বঙ্গবন্ধু কন্যার প্রবল স্পৃহার কাছে ভেসে গেলো সকল প্রতিবন্ধকতা। খুলে গেলো বন্ধ হওয়া স্বপ্নের দুয়ার। জোড়া লাগবে মানুষের স্বপ্নের এবং আবেগ-অনুভূতির!
পদ্মাসেতু আমাদের স্বনির্ভরতার গল্প, মাথা না নোয়াবার অহম, চূড়ান্ত আত্মমর্যাদার প্রতীক! একটি অসম্ভব স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা!
লেখকঃ সাদ বিন কাদের চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক-বাংলাদেশ ছাত্রলীগ