কেমন বাংলাদেশ চাই?


শাকিল মিয়া | Published: 2024-08-30 21:46:17 BdST | Updated: 2024-09-15 04:47:45 BdST

দীর্ঘদিন বাংলাদেশ বিভেদ আর বিভক্তির মধ্য দিয়ে গিয়েছে। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়েও ছিল টানাপোড়ন। অন্যায়-অনিয়ম, লুটপাট, সন্ত্রাস, মূল্যস্ফীতি, ভোট চুরি, ক্ষমতার অপব্যবহার ছিল নিত্যদিনের চিত্র। অতীত ও পুরনো দিনকে প্রত্যাখ্যান করে ছাত্র জনতা নতুন বাংলাদেশের সূত্রপাত করেছে। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো কেমন বাংলাদেশ চাই আমরা?

এই প্রশ্নের উত্তরে প্রচুর লম্বা লম্বা বক্তব্য সবার কাছে কিন্তু এখন পর্যন্ত পরিবর্তন কি আদৌ হয়েছে? না, হয়নি... পরিবর্তনের ধারা সূচিত হয়েছে ঠিকই কিন্তু কাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্য এখনো অনেকদূর। এবার আসি কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ কেমন হবে এই আলোচনায়।

নিজের পরিবর্তন চাই : আমরা সবাই বাংলাদেশের পরিবর্তন চাই কিন্তু নিজের পরিবর্তন করতে নারাজ। ব্যক্তি বা নাগরিক কেমন হওয়া উচিত এটা সবাই জানি মোটামুটি। এবার শুধু জানলেই হবে না বরং মানতে হবে আমাদের। সততা,দেশপ্রেম, নৈতিকতা, শৃঙ্খলা আর ভালোবাসার মানদণ্ডে এগিয়ে থাকতে হবে প্রতিটি নাগরিককে। ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি আর অন্যায়কে না বলার সাহস থাকতে হবে প্রতিটি নাগরিকের। নিজেকে পরিবর্তন করতে হবে তাহলেই সামগ্রিক পরিবর্তন সহজ হবে।

দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালন করতে হবে: এতোদিন দুষ্টরা ছিল রাষ্ট্র ও সমাজের কর্ণধার। আর এই মুহূর্তে দুষ্টদের দমন করে শিষ্টের লালন করতে হবে সবাইকে। অপরাধী যেই হউক তার বিচার নিশ্চিতের পাশাপাশি বিনা দোষে কাউকে নুন্যতম কষ্ট যেন না পেতে হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি বিবেককে জাগ্রত রেখে তারপর সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলতে হবে।

সিস্টেম বা নীতির পরিবর্তন চাই: এতোদিন নেতার পরিবর্তন হলেও নীতির পরিবর্তন দেখিনি। এবার নীতির পরিবর্তন এবং বাস্তবায়ন করতে হবে। ক্ষমতার রাজনীতি নয় বরং কল্যাণের রাজনীতি দেখতে চাই।রাতে ভোটচুরি করে আর দিনের বেলায় ভোট সুষ্ঠু হয়েছে এই মর্মে বক্তব্য শুনতে চাই না আর। নিজ দলের বিরুদ্ধে ভেটো দিলে এমপি পদ স্থগিত করার মতো বাজে সিস্টেমগুলোর পরিবর্তন চাই। রাষ্ট্রের সকল স্তরে সুশাসন, সাম্য, মানবিক মর্যাদা, ভ্রাতৃত্বের বাংলাদেশ চাই।

ক্ষমতার সুষম বন্টন চাই: কেউ দুই বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির মাঝে ক্ষমতার সুষম বন্টন চাই। পারিবারিক কোটায় রাজনীতিকে সীমাবদ্ধ করা চলবে না। রাষ্ট্রের সাংবিধানিক প্রতিটি প্রতিষ্ঠান সচল করা এবং সেখানে দায়িত্বশীল সবার স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।

পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক, রাজনীতিবিদ সহ সবকিছু পুঙ্খানুপুঙ্খ উল্লেখ করতে গেলে পাঠকরা বিরক্ত হবেন এই ভয়ে এতোটুকুতেই সীমাবদ্ধ করলাম লেখা। এতোদিন আমাদের চিন্তাগত একটা দূর্বলতা ছিল যে, রাষ্ট্র আমাকে কি দিয়েছে এটা ভাবতাম অথচ এখন সময় এসেছে রাষ্ট্রকে আমি ও আমরা কি দিচ্ছি সেটা ভাবা। শহিদ ভাইদের অবদানকে মাথায় রেখে বাংলাদেশের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য স্থির করে আসুন এক সাথে কাজ করি সবাই।

লেখক:
মোঃ শাকিল মিয়া
এক্টিভিস্ট ও রাজনৈতিক কর্মী।