জাবিতে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ, কনসার্টের ঘোষণা শিক্ষার্থীদের


জাবি | Published: 2019-11-07 10:19:54 BdST | Updated: 2024-05-19 17:24:21 BdST

বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা এবং হল খালি করার নির্দেশ দিয়েও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) উপাচার্য অপসারণে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে লাগাম টানতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ পরিস্থিতিতে জাবি ক্যাম্পাসে সব ধরনের সভা-সমাবেশ ও মিছিল এবং ক্যাম্পাসে অবস্থান নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এ ঘোষণার পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে কনসার্ট আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছেন।

বুধবার (৬ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কার্যালয় থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধের ঘোষণার কথা জানানো হয়।

এর মধ্যেই শিক্ষার্থীরা আগামীকাল বৃহস্পতিবারের (৭ নভেম্বর) জন্য তাদের আন্দোলন কর্মসূচির ঘোষণা দেন, যাতে সন্ধ্যায় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে কনসার্ট আয়োজন করার কথা বলা হয়। শিক্ষার্থীরা বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তারা ফের বিক্ষোভে নামবেন। সকালে প্রশাসনিক ভবনে তালা দেওয়ার পর দুপুর ১২টায় করবেন বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ। পরে সন্ধ্যায় আয়োজিত হবে কনসার্ট।

এদিকে, জাবি জনসংযোগ কার্যালয় থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের জরুরি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৬ নভেম্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস ও পরীক্ষা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এরই মধ্যে শিক্ষার্থীরা আবাসিক হল ত্যাগ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরের দোকানপাটও বন্ধ করা হয়েছে। তাই এই সময়ে ক্যাম্পাসে কোনো শিক্ষার্থীর অবস্থান সমীচীন নয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এ অবস্থায় যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধ ও সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থানরত কোনো শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে এসে সভা-সমাবেশ, মিছিল কিংবা কোনো অফিস বা আবাসিক এলাকায় অবস্থান করতে পারবে না।

তবে প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপই উপাচার্য ড. ফারজানা ইসলামকে অপসারণের আন্দোলনকে দমাতে পারছে না। গত ২৪ অক্টোবর থেকে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে এই আন্দোলন শুরু করেন জাবি শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের অংশ হিসেবে তারা নতুন ও পুরনো— দুই প্রশাসনিক ভবনই অবরোধ করে রাখেন। এর মধ্যে সোমবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যা থেকে উপাচার্যকে তার বাসভবনে অবরুদ্ধ করে রাখেন তারা। পরে মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে নারী শিক্ষার্থীসহ ৩০ থেকে ৩৫ জন আহত হন। এসময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনরত শিক্ষকদেরও লাঞ্ছিত করেন।

এ ঘটনার পর আরও উত্তাল হয়ে ওঠে জাবি ক্যাম্পাস। মোতায়েন করা হয় বাড়তি পুলিশ। বন্ধ ঘোষণা করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে সেসব নির্দেশনা উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার মধ্যরাত পর্যন্ত ক্যাম্পাসে অবস্থান করে ভিসিবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। পরে বুধবার সকাল ৯টা থেকে বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়ে তারা হলে ফিরে যান। বুধবার সকাল থেকে ফের নামেন আন্দোলনে। এদিন শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করে জাবি ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সংহতি জানিয়ে সমাবেশ আয়োজন করেন।