চবি : বিজয় দিবসের ব্যানারে ভাষা আন্দোলনের শহীদ মিনার


Chittagong | Published: 2020-12-16 21:22:18 BdST | Updated: 2024-05-18 19:34:31 BdST

যথাযোগ্য মর্যাদায় ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে মহান বিজয় দিবস উদযাপন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) কৃর্তপক্ষ। তবে বিজয় দিবসের আয়োজিত ব্যানারে শোভা পাচ্ছে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস ও ভাষা শহীদদের স্মৃতিতে নির্মিত শহীদ মিনারের ছবি। যা ক্যাম্পাসজুড়ে ইতিমধ্যে বেশ আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলছেন, শহীদ মিনার বাংলাদেশের চেতনার অংশ হলেও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সভায় তার ছবি বেমানান। কেননা সেটির প্রেক্ষাপট ভিন্ন। যদিও অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের কথা স্বীকার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

জানা যায়, বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীনতা স্মারক ভাস্কর্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যimageঅধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এর আগে ১৫ ডিসেম্বর দিবাগত রাত ১২টা ০১ মিনিটে বিজয় দিবসের সূচনালগ্নে বিউগল বাজিয় দিনটিকে স্বাগত জানানো হয়।

পরে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সদস্যদের স্মরণে নির্মিত ভাস্কর্য ‘স্মরণ’ সংলগ্ন চত্বরের ‘স্মরণ চত্বর’ নামকরণ ও নামফলক উন্মোচন এবং চবি আলাওল হল চত্বরে অবস্থিত প্রথম শহীদ মিনারের সংস্কারপূর্বক উদ্বোধন করেন।

স্বাধীনতা স্মারক ভাস্কর্যে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেন, যে বঙ্গবন্ধু না হলে বাংলাদেশ হত না, সেই জাতির পিতার ভাস্কর্যে আঘাত বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের উপর আঘাতের সামিল। এই সকল স্বাধীনতা বিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী কখনোই বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায়নি।

এসময় সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্যবৃন্দ, প্রক্টর-সহকারী প্রক্টরবৃন্দ ও ডিনবৃন্দসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

কিন্তু এই আলোচনা সভার ব্যানারে শহীদ মিনারের ছবি নিয়ে ক্যাম্পাসজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলছেন, শহীদ মিনার বাংলাদেশের চেতনার অংশ হলেও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সভায় তার ছবি বেমানান। কেননা সেটির প্রেক্ষাপট ভিন্ন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সেকান্দর চৌধুরী বলেন, শহীদ মিনার আমাদের ইতিহাসের একটা অংশ। কিন্তু সেটা স্বাধীনতা সংগ্রামকে প্রতিফলিত করেনা। মুক্তিযুদ্ধ ও বিজয়ের স্মৃতি হিসেবে স্মৃতিসৌধ রয়েছে। আমি বিশ্বাস করি ব্যানারে শহীদ মিনারের ছবিটি অনিচ্ছাকৃত ভুল। কিন্তু এটি মানানসই না।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, এই ব্যানারটি তৈরির দায়িত্বে ছিলেন উপাচার্য দপ্তরের ডেপুটি রেজিস্ট্রার জাহাঙ্গীর আলম। তিনি সিভয়েসকে বলেন, এর আগেও শহীদ মিনারের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। আগের ধারাবাহিকতায় এই ব্যানারটি তৈরি করেছি। বিশেষ করে দেশের অনেক জায়গাতেই স্মৃতিসৌধ না থাকায় বিজয় দিবস উদযাপন করা হয় শহীদ মিনারেই। তবে আমরা এটি নিয়ে অভিযোগ পেয়েছি, আগামীতে আর এমনটা হবে না আশা করি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. আতিকুর রহমান বলেন, ব্যানার তৈরির সময় আমাদেরকে দেখানো হয়নি, ফলে অনিচ্ছাকৃতভাবে এই ভুলটা হয়ে গেছে।