‘তোকে মাথা ফাটিয়ে খুন করে ফেলব’, ইবি শিক্ষককে সহকারী প্রক্টর


Kustia | Published: 2021-01-02 02:57:42 BdST | Updated: 2024-05-18 15:26:02 BdST

‘আজ তোকে মাথা ফাটিয়ে খুন করে ফেলব। তোর কোন বাবা আছে ডাক? আজ মেরেই ফেলব’-এমন কথা বলতে বলতে লাঠি হাতে নিয়ে এক শিক্ষককে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সহকারী প্রক্টর এমএম নাসিমুজ্জামানের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের আল ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আলতাফ হোসেন।

শুক্রবার (১ জানুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকা মেঘনা ভবনের (শিক্ষক কোয়ার্টার) পেছনে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই শিক্ষক ইবি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুস্তাফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা জিডির কপি হাতে পেয়েছি। আদালতে আমরা এটি পাঠিয়ে দেব। পরে আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে প্রসিকিউশনের অনুমতি নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

জিডি সূত্রে জানা যায়, ভবনের বিভিন্ন কাজে অন্যায়ভাবে সুবিধা নিতে না পারা ও বাগান করা নিয়ে অন্যায়ভাবে প্রাধান্য বিস্তার করতে না পারায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দুপুর বারোটার দিকে ওই শিক্ষকের দিকে লাঠি হাতে তেড়ে আসেন সহকারী প্রক্টর নাসিমুজ্জামান। এ সময় তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। এবং বলেন, ‘তোর কোন বাবা আছে ডাক? তোকে আজ দেখে নিব। তোকে আজ মেরেই ফেলব শু...বাচ্চা।’ এমতাবস্থায় ভুক্তভোগী ওই শিক্ষক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জিডিতে উল্লেখ করেন।

নাম না প্রকাশের শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, ‘সাবেক ভিসিপত্নী অধ্যাপক জাকারিয়া রহমান ও সাবেক প্রক্টরের ছত্রচ্ছায়ায় এর আগে তিনি (হুমকিদাতা) অনৈতিক সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করতেন। এখনও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।’

তবে অভিযুক্ত ওই শিক্ষক ঘটনাটি অস্বীকার করেছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমারতো মনে হয় কিছুই হয়নি। ও আমার ছোট ভাই। আবার একই ভবনে থাকি। একজন সুস্থ মানুষ হয়ে আমি তাকে কেন খুন করতে যাব? আর তাকে তো দূরের কথা, আমার চরম শত্রুুকেও কখনো গালাগাল করিনি। তার সঙ্গে পূর্বে কোনো শত্রুতাও ছিল না।’

এ সময় তিনি এ প্রতিবেদককে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আজকে কথা কাটাকাটি হয়েছে, কাল হয়তো মীমাংসা হয়ে যাবে। তবে তিনি যেন বিব্রত অবস্থায় না পড়েন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘এটি একটি অপ্রত্যাশিত ও দুঃখজনক ঘটনা। আমাকে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষক ঘটনাটি জানিয়েছেন। তবে হুমকিদাতা শিক্ষক এ ব্যাপারে কিছুই জানাননি। বিষয়টি নিয়ে আগামীকাল তাদের সঙ্গে বসব।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘এটি একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা। শিক্ষক হিসেবে এটা ভাবাই যায় না। বিষয়টি নিয়ে বসে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’