ফুটওভার ব্রিজ ও নিরাপদ সড়কের দাবি বেরোবি শিক্ষার্থীদের


Abul Khair Jajid | Published: 2024-02-10 22:57:55 BdST | Updated: 2024-07-27 06:12:25 BdST

রংপুরের পার্কের মোড়ের কোল ঘেঁষে অবস্থিত উত্তরের বাতিঘর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। এই পার্কের মোড়ের বুক চিরে বেরিয়ে গেছে উত্তরাঞ্চলের অন্যতম ব্যস্ত সড়ক রংপুর-কুড়িগ্রাম এবং রংপুর-বগুড়া মহাসড়ক।

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৯ হাজার শিক্ষার্থী। ব্যস্ততম এই মহাসড়কে নেই কোন পথচারী পারাপারের নিরাপদ ব্যবস্থা ( জেব্রাক্রসিং, স্পিডব্রেকার বা ওভারব্রিজ)। যে সকল শিক্ষার্থীদের মেসে বা বাসা থাকে, অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের মেসেগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপরীত পাশে। সুতরাং প্রতিনিয়ত মহাসড়ক পার হয়ে ক্যাম্পাসে যেতে হয়।

এর ফলে প্রায় সময়েই ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। গত ৯ ই ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্কের মোড়ের লিফা ফাস্টফুডের সামনে সড়ক দুর্ঘটনায় এক মাঝ বয়সী এক ব্যক্তি ট্রাকের চাপা নিহত হয়।

যে কোন ঘটে যেতে পারে শিক্ষার্থীদের সাথে এই ধরনের কোন দুর্ঘটনা, যেতে পারে কোমলমতি শিক্ষার্থীর প্রাণ। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিরাপদ সড়ক ও ফুটওভার ব্রিজ চেয়ে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট শেয়ার করে থাকেন।

রিয়াদ মোর্শেদ বলেন, আজকে এই জায়গায় যদি ভার্সিটির কোনো স্টুডেন্ট থাকতো তাহলে প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো জবাব আসতো? এই স্প্রিড ব্রেকার কি আসলেই কোনো কাজে দিলো? একটা ভার্সিটির এলাকায় বাস,ট্রাক পাল্লা দিয়ে চলাচল কিভাবে করতে পারে? এতো ছোটো ছোটো স্প্রিড ব্রেকার না দিয়ে একবারে দুই/তিনটা বড় স্প্রিড ব্রেকার দিলে এই ঘটনা ঘটতো বলে মনে হয় না।

মো. মামুন রেজা বলেন, একটা বিভাগীয় শহর হিসেবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন হওয়া সত্বেও নেই কোনো ওভার ব্রীজ,জেব্রা ক্রসিং কিংবা ট্রাফিক পুলিশ। সন্ধ্যার সময় ৪/৫ টা পুলিশ এসে পার্কের মোড়ে বসে চা খেয়ে চলে যায়। উদাসীনতার জন্যই এতকিছু হচ্ছে।

সূর্য মোহন রায় বলেন, এইখানে একটা ট্রাফিক পুলিশ ক্যাম্প খুব দরকার, অনেক গাড়িই বেপরোয়া ভাবে চালায়।

আফিয়া অন্তরা আনিকা বলেন, অন্যান্য যানবাহন কিছুটা ব্রেক দিলেও ট্রাকগুলা একদম হাইস্পিডেই এই জায়গা পার হয়। আমি নিজেও এমন ঘটনার স্বীকার হতে ধরছিলাম। যেখানে সবসময় ই আমাদের রাস্তার এপার ওপার যাওয়া আসা করতে হয় সেখানে নিরাপত্তা নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নাই প্রশাসনের!

মো. জাকির হোসেন সামির বলেন, একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনের রাস্তা দিয়ে বাস ট্রাক যে গতিতে চলে অবাক হওয়ার বিষয়, ক'দিন আগে আমাদের ডিপার্টমেন্ট এর এক ভাই ট্রাকে ধাক্কা খেয়েছিল। এভাবে চলতে থাকলে কদিন পর পর-ই কোন না কোন অঘটন ঘটবেই।

মো. ফজলে রাব্বি বলেন, এখন এখানে গতিরোধকের ব্যবস্থা করা হবে,আরও কত কি। অথচ স্থানটি খুবই ঝুকিপূর্ণ,এখন সকালের টনক নড়বে। এটাই আমার দেশের চিরাচরিত রীতি, ঘটনা ঘটার পূর্বে সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এর পূর্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী গুরুতর ভাবে আহত হয়েছিলো। কিছু বলার নেই, সিস্টেমেরই সমস্যা, আপনি আমি চাইলেও কিছু করতে পারবো না।
সবাই সিস্টেমের গ্যাড়াকলে আটকে আছি।

মো. সাব্বির আহমেদ বলেন, জরুরি ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য ওভার ব্রিজ, পুলিশ বক্স দেয়া এবং সেই সাথে বিশ্বিবদ্যালয়ের আশেপাশে দিন দিন ছিন্তাই কারী বেড়েই যাচ্ছে। আমরা একা চলতে পারি না। আমাদের কোনো নিরাপত্তা নেই - তাই আমি মনে করি সবাই মিলে একটা কঠোর আন্দোলন করা দরকার।