ডেঙ্গু ঝুঁকিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা


RU Correspondent | Published: 2022-11-20 21:48:13 BdST | Updated: 2024-10-13 21:55:52 BdST

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে মশার উপদ্রব। বিশেষ করে আবাসিক হলগুলোতে মাত্রাতিরিক্ত মশার উৎপাত দেখা গেছে। এতে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত নানা রোগের ঝুঁকির মুখে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। তবে মশক নিধনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো উদ্যোগ নেয়নি বলেও অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ- ক্যাম্পাসের ড্রেন ও জলাশয়গুলোতে অতিরিক্ত আবর্জনা ছাড়াও ঝোপঝাড়, জঙ্গলসহ হলের বাথরুম ও ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না করায় সম্প্রতি মশার উপদ্রব বেড়েছে। মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় রুমে বসে লেখাপড়া করাও কষ্টকর হয়ে পড়েছে। সরাক্ষণ কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হয়। তবে কয়েলের ধোয়া শ্বাসনালী ও ফুসফুসের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হওয়ায় সবসময় কয়েলও জ্বালিয়ে রাখা সম্ভব হয় না। এতে মশা নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে, সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়- বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭টি আবাসিক হলের আশপাশ ছাড়াও অ্যাকাডেমিক ভবনগুলোর ধারে ও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ খাবার দোকানগুলোর আশপাশসহ বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ময়লা আবর্জনা। এগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না করায় সেগুলো যেন মশার প্রজনন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। তাছাড়াও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গার ঝোপ-ঝাড়গুলোও দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার না হওয়ায় ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে মশার উপদ্রব। এতে সন্ধ্যা নামলেই ক্যাম্পাসে থাকাই দায় হয়ে যায় শিক্ষার্থীদের।

এ বিষয়ে কথা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা ফজলুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আশিক ইসলাম বলেন, ‘মশার উপদ্রবে পড়ালেখার টেবিলে বসা যায় না। হলের পাশের ফাঁকা জায়গাগুলো পরিষ্কার না করায় তা জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। এদিকে হলের পেছনের ড্রেনগুলোও নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। ফলে সহজেই মশা খুব দ্রুত বংশবিস্তার করেছে। এ জন্য রাতে মশার জন্য রুমে থাকা কঠিন হয়ে যায়। দিনের বেলাও মশারি টাঙিয়ে থাকতে হচ্ছে। এতে পরীক্ষা চলমান থাকা সত্ত্বেও ঠিকমতো পড়ালেখা করতে পারছি না।’

একই কথা জানিয়েছেন রোকেয়া হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ফারজানা তান্নি। তিনি বলেন, ‘মশার উপদ্রব ইদানিং খুব বেড়েছে, কিন্তু এ বিষয়ে প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছি না। সন্ধ্যা হলেই কোনো জায়গায় এক মিনিট শান্তিতে বসা যায় না।’

এদিকে, মতিহার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সুজিত রায় বলেন, ‘মশার যন্ত্রণায় গত কয়েকদিন যাবৎ ঠিকমতো রুমে থাকতে পারছি না। শেষ পর্যন্ত নতুন মশারি কিনে কেটে কেটে জানালায় লাগিয়েছি। কিন্তু এটা তো কোনো সমাধান হতে পারে না। তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই দ্রুত এ সমস্যা সমাধানে পুরো ক্যাম্পাসে নিয়মিত মশানিধক স্প্রে ব্যবহার করা হোক।’

এ বিষয়ে কথা হলে রাবির মেডিকেল সেন্টারের ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. শামীম হোসেন বলেন, ‘এখন মশার প্রজননের সময়। এ সময় মশার কামড়ে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়াসহ শিক্ষার্থীরা নানা মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হতে পারে।’

বিষয়টিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা এম তারেক নূর বলেন, ‘ক্যাম্পাসে মশার উপদ্রব আসলেই বেড়েছে। আমাদের দুইটি ফগার মেশিন আছে। স্টুয়ার্ড শাখাকে নিয়মিত মশা নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করতে বলেছি। প্রতি মাসে অন্তত দুইবার এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম ঢাকা মেইলকে বলেন, বিষয়টি উপাচার্য নিজে তত্ত্বাবধান করেন। সমস্যা সমাধানের জন্য আমি উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলব।