এবার শাহবাগে কর্মসূচি দিল মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ


Desk report | Published: 2024-07-13 11:39:35 BdST | Updated: 2024-09-08 06:53:35 BdST

কোটা সংস্কারের দাবিতে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ ব্যানারে কয়েকদিন ধরেই রাজধানী শাহবাগসহ দেশের বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। এবার শাহবাগে পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করল মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। ৭ দফা দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করবে সংগঠনটি। শুক্রবার (১২ জুলাই) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনিবার (১৩ জুলাই) বিকেল ৪টায় শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ পালন করবে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। এতে বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারসহ মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সব সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত থাকবেন।

মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ জানায়, কোটা ইস্যুতে আন্দোলনের নামে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে কটূক্তিকারীদেরকে দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ ৭ দফা দাবিতে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে শুক্রবার বিকেলে আবারও শাহবাগ মোড় আটকে অবস্থান নেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা। বিকেল ৫টার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে অগ্রসর হন শিক্ষার্থীরা। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ঘণ্টাখানেক অবস্থান করার পর শনিবার সন্ধ্যায় পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে জানিয়ে শিক্ষার্থীরা শাহবাগ ছেড়ে যার যার ক্যাম্পাসের দিকে ফিরে যান।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে মোট ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। এ কোটা পদ্ধতি সংস্কার করে সব ধরনের কোটা ১০ শতাংশের মধ্যে নামিয়ে আনার দাবিতে ওই বছর আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে ওই আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনের মুখে ওই বছরের ৪ অক্টোবর পরিপত্র জারি করে সব ধরনের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটাব্যবস্থাই বাতিল করে সরকার।

ওই সময় ৩০ শতাংশ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তান-নাতি-নাতনি কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা, ১০ শতাংশ জেলা কোটা, ৫ শতাংশ ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী কোটা ও ১ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা চালু ছিল সরকারি চাকরিতে। ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি-১ শাখা থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে নবম গ্রেড থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত সরাসরি নিয়োগে সব ধরনের কোটা বাতিল করা হয়।

ওই পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা ২০২১ সালের জুন মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। রিটের শুনানি নিয়ে ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করেন। রুলে সরকারি চাকরিতে ৯ম গ্রেড থেকে ১৩ম গ্রেড পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও তাদের সন্তানদের ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত বাতিল করে জারি করা পরিপত্র কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।

রিটের শুনানি নিয়ে ৫ জুন ঘোষণা করা রায়ে হাইকোর্ট পরিপত্রের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা বাতিলের অংশটি অবৈধ ঘোষণা করেন। এরপরই শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা আবার ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে’র ব্যানারে নতুন করে কোটাবিরোধী আন্দোলন শুরু করেছেন।