প্রশাসনের অগোচরে রাতের আঁধারে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পুকুর থেকে মাছ ধরে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। ছাত্রলীগের এমন কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে প্রশাসনের উদাসীনতা ও নজরদারির অভাবকেই দায়ী করছেন সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, গত শনিবার (১ এপ্রিল) গভীর রাতে সিলেটের লামাকাজী এলাকা থেকে জেলে এনে মাছ ধরে তা বিক্রির অভিযোগও উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের সাবেক পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক খলিলুর রহমান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুমন মিয়াসহ অন্যান্য নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ সময় তাদের সহযোগিতা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রাইভার মো. সফিকুল ইসলাম।
সেখানে উপস্থিত জেলেরা জানান, সেহেরির আগ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পুকুরে ৮-১০ জন জেলে নিয়ে মাছ ধরেন নেতাকর্মীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের পরীক্ষামূলক পুকুর, কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনের পুকুর, আইআইসিটি ভবন সংলগ্ন পুকুরসহ বিভিন্ন পুকুর থেকে মাছ ধরেন বলে জানান তারা।
মাছ ধরতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি আছে কিনা জানতে চাইলে উপস্থিত জেলেরা জানান, আমরা কিছু জানি না। আমরা লামাকাজী থেকে এসেছি। ছাত্রলীগের খলিলুর রহমান মাছ ধরতে বলেছেন তাই আমরা মাছ ধরছি। এরপর সেগুলো তারা বিক্রি করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন খাল ও নালা থেকে রাতভর সেঁচে মাছ ধরার অভিযোগও রয়েছে নেতাদের বিরুদ্ধে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে তারা একাডেমিক ভবন-বি এর সামনের খাল, প্রশাসনিক ভবন-১ এর পেছনের খাল, একাডেমিক ভবন-সি এর সামনের পুকুর একাধিকবার সেঁচেও মাছ ধরেছেন বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. ফজলুর রহমান বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। আমাকে কেউ জানায়নি। এ বিষয়টা আমার অধীনেও না।
রাতের বেলা বাইরে থেকে জেলে নিয়ে এসে পুকুর থেকে মাছ ধরার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. কামরুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত নই। আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। এটা আমার এখতিয়ারেও নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেইট শাখার প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. রোমেল আহমেদ বলেন, আমি এ বিষয়ে অবগত নই। আমাকে এ বিষয়ে কেউ কিছু জানায়নি।
এ বিষয়ে খলিলুর রহমান বলেন, ছেলেরা শখের বশে কয়েকটা মাছ ধরছে। এটা তারা মারতেই পারে। ছেলেরা তো আর পানিতে নেমে মাছ ধরবে না। সেজন্য তারা জেলে নিয়ে এসে মাছ ধরেছে। আর মাছ ধরে বিক্রি করার বিষয়টা সম্পূর্ণ মিথ্যা।